Deepavali or Diwali Utsav 2025
দীপাবলি হল আলোর উৎসব। নিকষ কালো অন্ধকার থেকে আলোয় ফেরার উৎসবই দীপাবলি উৎসব। সারা দেশ জুড়ে এইদিন মানুষ পরিবার পরিজনকে সঙ্গে নিয়ে আনন্দ-উৎসবে মেতে ওঠেন। সন্ধ্যেবেলা সারি সারি প্রদীপ জ্বালিয়ে ঘর আলোকিত করেন। বৈদ্যুতিক বাতির রঙ-বেরঙের আলো আর আতস বাজির খেলায় সেজে ওঠে গ্রাম থেকে শহর।
অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে শুভ শক্তির বিজয় উৎসব হল দীপাবলি। বলা হয় দীপাবলির দিন রামচন্দ্র লঙ্কাকাণ্ড সমাধা করে লক্ষণ-সীতাকে সঙ্গে নিয়ে অযোধ্যা ফিরেছিলেন। তাদের প্রত্যাবর্তনে অযোধ্যা সেদিন আলোর উৎসবে মেতে উঠেছিল। আবার বলা হয় এই দিনে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের হাতে বধ হয়েছিলেন বরাহপুত্র নরকাসুর। ষোলো হাজার বন্দী নারীর মুক্তিতে সেদিনও পৃথিবীতে নাকি আলোর বন্যা বয়ে গিয়েছিল।
দীপাবলি ২০২৫ নির্ঘণ্ট
এবছর অর্থাৎ ২০২৫ সালের দীপাবলি উৎসব পালিত হবে ২১ অক্টোবর, মঙ্গলবার। কার্ত্তিক মাসের অমাবস্যার ওই একই দিনে পালিত হবে কালী পুজো। দীপাবলির আগের দিন সোমবার, ২০ অক্টোবর পড়েছে ভূত চতুর্দশী। এবছর ধনতেরাস উৎসব পালিত হবে ১৮ অক্টোবর, শনিবার।
বিদেশে দীপাবলি উৎসব
শুধু ভারতবর্ষে নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে দুমধাম করে পালন করা হয় এই উৎসব। প্রতিবেশী দেশ নেপাল, বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কা ছাড়াও সুদুর ব্রিটেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মালেশিয়া, সিঙ্গাপুর, ফিজি, মরিশাস এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে আলোর উৎসবে মাতেন স্থানীয় মানুষজন।
তবে এবছর ভারতের বাইরে সবথেকে বড় দীপাবলি উৎসবের আয়োজন করতে চলেছে থাইল্যান্ড। প্রতিবেদন অনুসারে, থাইল্যান্ডের কনসাল জেনারেল গতকাল কলকাতায় একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় এই কথা বলেন। দুদেশের মধ্যে বন্ধুত্ব এবং সাংস্কৃতিক সম্প্রীতির সুদীর্ঘ সম্পর্ককে মর্যাদা দিতেই মহাসমারহে এবার দীপাবলি পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন – ‘ধন্বন্তরি’ উটের চোখের জল! এক ফোঁটায় কাটবে ২৬টি সাপের বিষ, দাবি ভারতীয় বিজ্ঞানীদের
অন্যান্য ধর্মে দীপাবলি উৎসব
ভারতীয়দের একটি প্রিয় উৎসব দীপাবলি। শুধু সনাতন হিন্দুধর্মই নয়, বৌদ্ধ, জৈন এবং শিখ ধর্মেও এই উৎসব পালন করার রীতি প্রচলিত রয়েছে। জৈন ধর্মে দীপাবলির দিনটি ভগবান মহাবীরের মোক্ষলাভের স্মৃতির উদ্দেশ্যে পালন করা হয়। ৫২৭ খ্রিস্টপূর্বে এই দিনেই ভগবান মহাবীর নির্বাণ লাভ করেছিলেন। জৈনধর্মাবলম্বীদের কাছে তাই এই দিনটি হল আত্মসংযম, অহিংসা ও ত্যাগের প্রতীক। জৈন ধর্মের মত বৌদ্ধ ধর্মেও এই দিনটি ইতিহাসকে মনে রেখেই পালন করা হয়। মৌর্য সম্রাট অশোক কলিঙ্গ যুদ্ধের পর এই দিন বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। শিখ ধর্মেও এইসময় পালিত হয় ঐতিহাসিক ‘বন্দী ছোড়’ দিবস। ১৬১৯ সালে ষষ্ঠ শিখ গুরু হরগোবিন্দ সিং ও ৫২ জন রাজপুত্র এই দীপাবলির দিনেই মুঘল কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। সেই দিনটিকে স্মরণ করে শিখধর্মেও মহাসমারোহে পালন করা হয় আলোর এই উৎসব।