দু’দিন পরেই ২৭ জুন রথযাত্রা। তার আগে পুরীর জগন্নাথ মন্দির সাক্ষী থাকল অপ্রত্যাশিত একটি ঘটনার। জানা যাচ্ছে, মন্দিরের গারদাঘরা কক্ষ থেকে ‘চুরি’ হয়ে গেছে ভগবান জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রার ঔষধি মোদক। আর এই অভিযোগ করেছেন জগন্নাথ মন্দিরের একজন বরিষ্ঠ সেবায়ত। তাঁর কথায় অন্তত ৭০ টি ভেষজ ঔষধের মোদক হঠাৎ করে থেকে উধাও হয়ে গেছে বিশেষ ওই কক্ষ থেকে। এরকম ঘটনা পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের ইতিহাসে বিরল বলে দাবি করছেন অনেকেই।
গত ১১ জুন ছিল শ্রীজগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে স্নানযাত্রার পর শ্রীজগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা অসুস্থ হয়ে পড়েন। এবং রথযাত্রার আগের দিন অবধি তারা থাকেন লোকচক্ষুর আড়ালে। মাঝের এই কদিন রাজবৈদ্যর তৈরি করা দশমূল মোদকি ঔষধে চলে তাঁদের চিকিৎসা। সুস্থ হয়ে একেবারে রথযাত্রার দিন তাঁরা রথে গিয়ে বসেন। এখন ভগবানের সেই ঔষধ থেকেই ৭০ টি লাড্ডু ‘চুরি’ গেছে বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন –
পুরীর জগন্নাথ মন্দির রহস্য, ব্যাখ্যা মেলেনি আজও
প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ভগবানের চিকিৎসার জন্য মোট ৩১৩ টি মোদক তৈরি করেছিলেন রাজবৈদ্য। মন্দিরের ভেতর নির্দিষ্ট কক্ষে রাখা ছিল ঔষধি লাড্ডুগুলো। ২১ জুন একাদশীর রাতে ভগবান বলভদ্রের বাদগ্রাহী হলধর দাস মহাপাত্র যখন ভগবানকে মোদক উৎসর্গ করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, ঠিক তখন তিনি খেয়াল করেন প্রায় ৭০ টি ঔষধ সেখানে নেই। দশমূল মোদক নিখোঁজের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মন্দির কর্তৃপক্ষের কাছে তৎক্ষণাৎ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। তাঁর চিঠিতে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবিও করা হয়। পুরো ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায় চারিদিকে।
রথযাত্রার ঠিক আগে, মোদক চুরির ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই উঠে আসছে নানান প্রশ্ন। কড়া নিরাপত্তার মাঝে মন্দিরের ভেতর থেকে কিভাবেই বা মোদক ‘চুরি’ গেল, সন্দেহ থেকে যাচ্ছে। শ্রীক্ষেত্রে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের ঐতিহ্য ও পরম্পরার প্রতি এই ঘটনা জোরালো ধাক্কা বলে মনে করছেন অনেকেই। ভক্তদের মতে, ঔষধি মোদক শুধুমাত্র একটি খাবার নয়, দীর্ঘ প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী তা হল ভগবানের আরোগ্যের পথ্য। যদিও, ইটিভি ভারতে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, আজ মঙ্গলবার, পুরীর মন্দিরের প্রধান প্রশাসক শ্রীজগন্নাথ এবং তাঁর ভাইবোনের উদ্দেশ্যে নিবেদনের জন্য বরাদ্দ ‘দশমূল মোদক’ চুরির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।