নিলামে উঠছে পৃথিবীতে পাওয়া মঙ্গল গ্রহের সবথেকে বড় উল্কাপিণ্ড। ২৫ কেজিরও বেশি ওজনের এই টুকরোর পরিমাপ- ১৫ ইঞ্চি বাই ১১ ইঞ্চি বাই ৬ ইঞ্চি। পৃথিবীতে আবিষ্কার হওয়া মঙ্গল গ্রহের যে কোনো অংশের তুলনায় এটি প্রায় ৭০ শতাংশ বড়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত নিলাম সংস্থা সোথবি’স আগামী ১৬ জুলাই এটি নিলামে তুলবে। তার আগে এনডব্লিউএ ১৬৭৮৮ নামের এই উল্কাপিণ্ডের আনুমানিক নিলাম মূল্য কত হতে পারে, সেই নিয়ে শুরু হয়েছে জোর চর্চা।
সোথবি’স-এর মতে মঙ্গল গ্রহ থেকে ছুটে আসা উল্কাপিন্ড অত্যন্ত বিরল। কারণ, এখনো পর্যন্ত পৃথিবীতে পাওয়া যে উল্কাপিন্ডগুলি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতিলাভ করেছে তার সংখ্যা ৭৭ হাজার। যার মধ্যে মঙ্গল গ্রহ থেকে আগত উল্কাপিণ্ডের সংখ্যা হল মাত্র ৪০০টি। আর নিলামে ওঠা এই এনডব্লিউএ ১৬৭৮৮ উল্কাপিণ্ডটি হল পৃথিবীতে আবিষ্কৃত সমস্ত মঙ্গলগ্রহের উপাদানের প্রায় ৬.৫ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, কোন এক সময় মঙ্গল গ্রহের পৃষ্টে বিশাল এক গ্রহাণুর ধাক্কায় মহাশুন্যে ছড়িয়ে পড়েছিল ধ্বংসাবশেষ। তারই মধ্যে কোন একটি অংশ দলছুট হয়ে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির আওতায় এসে পড়ে। তারপর সেটি বায়ুমণ্ডল ভেদ করে আছড়ে পড়ে সাহারা মরুভূমির উপরে। সাহারা মরুভূমিতে অবতরণের আগে এটি প্রায় ২ হাজার ২৫০ লক্ষ কিলোমিটার অন্তরীক্ষ অতিক্রম করেছিল। সোথবি’স অনুসারে, ২০২৩ সালে নাইজারের প্রত্যন্ত আগাদেজ অঞ্চলে এই উল্কাপিন্ডটি খুঁজে পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন – Yangtze River China: লাল নদীর উপর ৩০০টি বাঁধ হঠাৎ ভেঙ্গে দিল চীন, কিসের ইঙ্গিত?
আসলে, বায়ুমণ্ডলের মধ্যে দিয়ে আসার সময় প্রচণ্ড ঘর্ষণের ফলে যে তাপ উৎপন্ন হয় তাতে বেশিরভাগ উল্কাই মহাকাশে পুড়ে শেষ হয়ে যায়। আবার পৃথিবীপৃষ্ঠের অধিকাংশ জলভাগ থাকায়, যদিওবা কোনো উল্কাপিন্ড পৃথিবীতে এসে পৌঁছায়, তা শেষ পর্যন্ত পৃথিবীর স্থলভাগে পড়ার চেয়ে কোনো না কোন মহাসাগরে পড়ার সম্ভাবনাই থাকে বেশি। এনডব্লিউএ ১৬৭৮৮ উল্কাপিণ্ডটি সৌভাগ্যক্রমে বায়ুমণ্ডলের বাধা কাটিয়ে স্থলভাগে এসে পড়েছিল।
এহেন দুষ্প্রাপ্য উল্কা পিণ্ডের দাম যে আকাশছোঁয়া হবে তাতে সন্দেহের অবকাশ নেই। তাছাড়া, পৃথিবীতে পাওয়া মঙ্গল গ্রহের সবথেকে বড় উল্কাপিণ্ড এটিই। ইতিমধ্যে এটির দাম নাকি ১৩ কোটি টাকায় গিয়ে পৌঁছেছে। সোথবির মতে, এনডব্লিউএ ১৬৭৮৮ উল্কাপিণ্ডটির চূড়ান্ত নিলাম মূল্য ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেও পৌঁছতে পারে। তাই যদি হয় তবে ভারতীয় মুদ্রায় এই বিরল পাথরের অর্থ দাঁড়াবে প্রায় ৩৪ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন – ‘ধন্বন্তরি’ উটের চোখের জল! এক ফোঁটায় কাটবে ২৬টি সাপের বিষ, দাবি ভারতীয় বিজ্ঞানীদের