International Space Station: যাত্রা শুরু হয়েছিল ২৫ জুন, বুধবার বেলা ১২ টা ১ মিনিটে। তারপর মাত্র ৪০০ কিলোমিটার পাড়ি দিতে সময় লেগে গেল ২৮ ঘন্টা। জটিল কক্ষপথের যান্ত্রিকতায় পাক খেতে খেতে শুভাংশুরা যখন অবশেষে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে ‘ডকিং’ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলেন তখন ঘড়িতে বাজে ভারতীয় সময় বিকেল চারটে। বৃহস্পতিবার ,২৬ জুন। টানটান উত্তেজনার এই ২৮ ঘণ্টা স্মরণীয় হয়ে থাকবে ভারতীয় মহাকাশ যাত্রার ইতিহাসে।
বুধবার ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে শুভাংশু সহ ৪ মহাকাশযাত্রীকে সঙ্গে নিয়ে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিল অ্যাক্সিয়ম-৪ । ফ্যালকন ৯ রকেটের উৎক্ষেপণ ছিল দেখার মত। কোটি কোটি ভারতবাসীর চোখ আর আবেগ আটকে ছিল আকাশের দিকে। কেমন কাটবে শুভাংশুদের আগামী ২৮ ঘন্টা। কিন্তু অন্তরীক্ষের অতল গর্ভে ভারত সন্তানের যাত্রা ছিল রোমাঞ্চে ভরপুর। অজানাকে দেখার নতুন আনন্দের সঙ্গে সুভাংশুর সঙ্গে ছিল আপামর দেশবাসীর শুভকামনা, তার প্রিয় খাবার এবং শাহরুখ খানের স্বদেশ ছবির গান- ‘ইউঁ হি চলা চল রাহি।’
শুভাংশু শুক্লার মহাকাশ সফরের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ইতিহাসের অনেক উজ্জ্বল স্মৃতি। ৪১ বছর আগে, ১৯৮৪ সালে সোভিয়েত ইন্টারকসমস প্রোগ্রামের অংশ হিসাবে প্রথম ভারতের হয়ে অন্তরীক্ষে পা দিয়েছিলেন রাকেশ শর্মা। এরপর এতদিন পর আবার মহাশূন্য ছুঁয়ে দেখলেন আর এক ভারত সন্তান। শুভাংশু শুক্লা হলেন প্রথম ভারতীয় যিনি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে যাওয়ার সুযোগ পেলেন। এছাড়া, ফ্লোরিডার স্পেস সেন্টারের যে লঞ্চ কমপ্লেক্স ৩৯এ থেকে শুভাংশুদের রকেট উৎক্ষেপণ হল, ১৯৬৯ সালে ঠিক সেখান থেকেই নীল আর্মস্ট্রং অ্যাপেলো-১১ চড়ে চাঁদের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন।
শুভাংশুদের এই মিশনের নাম হল ‘অ্যাক্সিয়ম-৪’। মিশন পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে ‘অ্যাক্সিয়ম স্পেস’ নামের মার্কিন মহাকাশ সংস্থা। প্রযুক্তিগত সহযোগী হিসাবে রয়েছে ইলন মাস্কের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা স্পেসএক্স (SpaceX) এবং মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা (NASA)। যে ক্যাপসুলে করে তাঁরা অন্তরীক্ষ যাত্রা করলেন সেটি ছিল স্পেসএক্সেরই তৈরি করা ‘ড্রাগন সি-২১৩’ স্পেসক্রাফট।
এই মিশনে শুভাংশুর সঙ্গে সওয়ার ছিলেন আরও তিনজন নভশ্চর। ‘অ্যাক্সিয়ম-৪’ মিশনের কমান্ডার হলেন নাসার প্রাক্তন মহাকাশচারী পেগি হুইটসন এবং আর দুজন হলেন হাঙ্গেরির টিবর কাপু এবং পোল্যান্ডের স্লায়োস উজনানস্কি।