Shah Rukh Khan National Award
জাতীয় পুরস্কার পেলেন অভিনেতা শাহরুখ খান। ৩৩ বছরের বলিউড জীবনে এই প্রাপ্তি শাহরুখের পাওনা ছিল। অবশেষে তা পেলেনও। ৭১ তম জাতীয় চলচ্চিত্র উৎসবে কিং খান বিক্রান্ত ম্যাসির সঙ্গে সেরা অভিনেতার পুরস্কার ভাগ করে নিয়েছেন। বিক্রান্তেরও এটি প্রথম জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্তি।
অ্যাটলি পরিচালিত ‘জওয়ান’ ছবিতে অনবদ্য অভিনয় করার জন্য শাহরুখ খান জাতীয় পুরস্কার পেলেন। এই ছবিতে শাহরুখ খানের সঙ্গে ছিলেন দীপিকা পাড়ুকোন। পুরস্কার পাওয়ার পর বলিউড বাদশা বেশ আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন। এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে তিনি তাঁর উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।
Thank you for honouring me with the National Award. Thanks to the jury, the I&B ministry… Iss samman ke liye Bharat Sarkar ka dhanyawaad. Overwhelmed with the love showered upon me. Half a hug to everyone today…. pic.twitter.com/PDiAG9uuzo
— Shah Rukh Khan (@iamsrk) August 1, 2025
অন্যদিকে উৎসবে সেরা ছবির পুরস্কার পেয়েছে বিক্রান্ত ম্যাসি অভিনীত ‘টুয়েলভথ ফেইল’। ‘মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে’ সিনেমার জন্য সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন রানী মুখার্জি। উৎসবে সেরা বাংলা ফিচার ফিল্মের শিরোপা পেয়েছে অর্জুন দত্ত পরিচালিত ‘ডিপ ফ্রিজ’। এই ছবিতে অভিনয় করেছেন আবির চট্টোপাধ্যায় এবং তনুশ্রী চক্রবর্তী।
দীর্ঘ ৩৩ বছরের অভিনয় জীবনে তিনি দেশ এবং দর্শককে অসংখ্য কালজয়ী ছবি উপহার দিয়েছেন। ১৯৯২ সালে তাঁর প্রথম ছবি ‘দিওয়ানা’ মুক্তি পায়। ১৯৯৩ সালের ‘বাজিগর’ এবং ডর ছবির ব্যাপক সাফল্য তাঁকে শিরোনামে নিয়ে চলে আসে। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। তাঁর কালজয়ী ছবিগুলির মধ্যে ১৯৯৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’, ‘দিল তো পাগল হ্যায়’ (১৯৯৭), ‘পরদেশ’ (১৯৯৭), ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ (১৯৯৮), ‘বাদশা’ (১৯৯৯), ‘মহাব্বতে’ (২০০০), ‘দেবদাস’ (২০০২), ‘বীরজারা’ (২০০৪) এবং ‘স্বদেশ’ (২০০৪), ‘মাই নেম ইজ খান’ (২০১০) এবং ‘জওয়ান’ (২০২৩) অন্যতম।
আরও পড়ুন – ‘সাইয়ারা’ ঝড়ের পর এবার কিয়ারা দাপট, ‘ওয়ার ২’ ছবিতে কিয়ারা আদভানির লুকে বুঁদ নেটপাড়া , দেখুন ছবি
‘জওয়ান’ ছবি মুক্তির আগের বেশ কয়েক বছর তার অনেকগুলি ছবি মুখ থুবড়ে পড়েছিল। বক্স অফিসে সেই ভাবে সাফল্য পাচ্ছিলেন না তিনি। সমালোচকদের সমালোচনা সহ্য করেও তিনি চুপচাপ ছিলেন। অবশেষে অ্যাটলির থ্রিলার ঘরানার এই ছবির মাধ্যমে তিনি ফের বলিউডের সিংহাসনে বসেন। ম্যাজিকের মতন কিং খানের এই কামব্যাক শাহরুখ ভক্তদের মোহিত করেছিল।
এর মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেছিলেন তিনিই বলিউড বাদশা। ‘জওয়ান’ ছবি ছিল একটি দৃষ্টান্ত যার মাধ্যমে শাহরুখ খান দেখিয়ে দিয়েছিলেন সিনেমাজগতে তার জাতটাই আলাদা। পেক্ষাগৃহে এই ছবি মুক্তি পাওয়ার পর উপচে পড়েছিল দর্শকদের ভিড়। কিং খানকে আবার পুরোনো ফর্মে দেখে ভক্তরা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিল। তবে শাহরুখের এই ফিরে আসা যে ছিল শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা, সেটা জানতেন তার ভক্তরা।

তবে জওয়ান-এর মত একটি কমার্শিয়াল ছবি কিভাবে শাহরুখকে জাতীয় পুরস্কার এনে দিল, সেই নিয়ে বিভিন্ন মহলে উঠেছে নানান প্রশ্ন। তাঁর অনুরাগীরা ‘স্বদেশ’ কিম্বা ‘চক দে ইন্ডিয়া’-র মত ছবিকে আরো উপরের সারিতে রাখার পক্ষপাতী।
আসলে, ‘জওয়ান’ কমার্শিয়াল ছবি হলেও এই কাহিনীর পরতে পরতে মিশে আছে সমাজ এবং রাজনীতি। দুর্নীতিগ্রস্থ সিস্টেমের বিরুদ্ধে লড়াই ছিল এই ছবির মূল প্রেক্ষাপট। সুতরাং, শুধুমাত্র বিনোদনের নিরিখে এই ছবিকে দেখলে ভুল হবে। বরং এই ছবির মাধ্যমে ঘুণধরা সমাজের বিরুদ্ধে ‘আজাদ’-এর লড়াইকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
দিল্লির একটি সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে হয়ে বলিউডে নিজের জায়গা করে নিতে তাঁকে কঠিন লড়াই করতে হয়েছিল। একদিনে তৈরি হয়নি বলিউড বাদশার সাম্রাজ্য। অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে এক একটা দিন তাঁকে কাঁধে কাঁধ দিয়ে লড়াই করতে হয়েছিল। টানা ৩৩ বছর ধরে নানা উত্থান পতনের মধ্যে দিয়ে গেছে তাঁর কেরিয়ার। তবু তিনি কখনো হার মানেননি। একের পর এক ছবির মাধ্যমে দর্শকদের মন জয় করেছেন। তৈরি করেছেন নিজের রাজত্ব। বলিউডের বিশাল বিস্তৃত জগতে তাই তিনি মেগাস্টার, বাদশা, আমাদের কিং খান।