‘চাঁদ সামলে রাখো জোছনাকে’
কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর দিনই আকাশে দেখা যাবে ‘হারভেস্ট মুন’। আজ ৬ অক্টোবর এবং আগামীকাল ৭ অক্টোবর দেখা যাবে এই চাঁদ। দুর্গাপুজো শেষ হতেই শরতের আকাশে এই অপূর্ব চন্দ্রোদয় দেখার সুযোগ পাবেন মহাকাশপ্রেমীরা। বিজ্ঞানের পরিভাষায় যাকে বলে ‘সুপারমুন’। অর্থাৎ, এই সময় চাঁদ পৃথিবীর খুব কাছাকাছি চলে আসে। ফলে সাধারণ পূর্ণিমার তুলনায় চাঁদের ঔজ্জ্বল্য প্রায় ১৩ শতাংশ বেশি হয়। আকারের দিক থেকেও ‘হারভেস্ট মুন’ হবে সাধারণ পূর্ণিমার চাঁদের তুলনায় ৬ শতাংশ বড়।
এবছর এই বিশেষ দৃশ্য দেখা যাবে ৬ এবং ৭ অক্টোবর রাতে। সূর্যাস্তের পর আকাশে উদয় হবে বিশালাকায়, উজ্জ্বল চাঁদ। পরিষ্কার আকাশ থাকলে চাঁদের আলোয় ভরে যাবে চারিদিক। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ৬ অক্টোবর থেকেই চাঁদ ধীরে ধীরে পৃথিবীর আরও কাছাকাছি আসতে শুরু করবে এবং ৭ অক্টোবর তা পূর্ণ আকার নেবে। এই সময় চাঁদের রঙ্গেও কিছুটা পরিবর্তন দেখা যাবে। সোনালি আভা মিশে থাকবে সাদা আলোয়। চাঁদ ওঠার সময় দিগন্তের কাছে এই চাঁদ দেখাবে হলুদ-কমলা রঙের।
পঞ্জিকা অনুযায়ী, ৬ অক্টোবর পড়ছে পূর্ণিমা তিথি, যেদিন বাংলার ঘরে ঘরে পালিত হবে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো। আর সেই সময়েই আকাশে দেখা যাবে বছরের সবচেয়ে বড় এবং উজ্জ্বল চাঁদ।
‘হারভেস্ট মুন’ কি?
‘হারভেস্ট মুন’ নামের মধ্যেই লুকিয়ে আছে চাঁদের এমন নামকরণের তাৎপর্য। ‘হারভেস্ট’ কথার অর্থ হল ‘ফসল তোলা’ বা ‘ফসল কাটা’। বিশ্বাস করা হয়, প্রাচীনকালে এই এই পূর্ণিমার সময় কৃষকরা চাঁদের আলোয় সন্ধ্যের পর মাঠে ফসল তোলার সুযোগ পেত। কৃষিভিত্তিক সমাজে এই পূর্ণিমা ছিল তাই এককথায় শুভ সময়ের প্রতীক। তাই এমন নামকরণ।
আরও পড়ুন – কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোয় এই তিন জিনিস একেবারেই এড়িয়ে চলুন, দেবী অসন্তুষ্ট হন বলেই প্রচলিত বিশ্বাস
চাঁদের কক্ষপথ বৃত্তাকার না হওয়ার জন্য চাঁদ এবং পৃথিবীর মধ্যেকার বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম হয়। পৃথিবীতে আবর্তনের সময় চাঁদ যখন পৃথিবীর একেবারে কাছে চলে আসে তখন চাঁদকে পৃথিবী থেকে খুব বড় এবং উজ্জ্বল দেখায়। চাঁদের এই অবস্থানকে বলে পেরিজি।
‘হারভেস্ট মুন’ কোথা থেকে দেখা যাবে?
এবারের হারভেস্ট মুন দেখা যাবে উত্তর গোলার্ধের প্রায় সব দেশ থেকেই। আকাশ থাকে পরিষ্কার ভারত থেকেও ৭ অক্টোবর সন্ধ্যা নামলে খালি চোখে দেখা যাবে থালার মতো সেই বিশাল চাঁদ। বায়ুদূষণ কম থাকলে, চাঁদকে আরও পরিষ্কার দেখা যাবে।
শেষবার এমন দৃশ্য দেখা গিয়েছিল ২০২০ সালে, আর পরবর্তী বার তা ঘটবে ২০২৮ সালে। অর্থাৎ এবারের ‘হারভেস্ট মুন’ না দেখলে আবার তিন বছর অপেক্ষা করতে হবে। তাই মহাকাশপ্রেমী এবং ফটোগ্রাফারদের কাছে এই অক্টোবরের রাত হবে বিশেষ এক মহাজাগতিক ঘটনার সঙ্গে সাক্ষাৎ। মহাবিশ্বের এক দুর্লভ মুহূর্তের সাক্ষী থাকবে পৃথিবী।