Top 5 Offbeat Places Near Darjeeling: ছুটি কাটানোর নতুন ঠিকানা অফবিট ডেস্টিনেশন। মূল স্রোতের জায়গাগুলি ছেড়ে ভ্রমণপিপাসুরা এখন ছুটছে অচেনা অজানা জায়গার খোঁজে। এই ট্রেন্ড এখন বিশ্বজুড়ে। হালফিলে আমাদের দার্জিলিং, কার্শিয়াং, কালিম্পংয়ে বেড়াতে গেলেও সবাই এখন ভিড় করছেন চারিপাশের পাহাড়ি গ্রামগুলোতে। পাহাড়ের গা ঘেঁষে ছোট ছোট এই গ্রামগুলোকে দুর থেকে দেখলে ছবির মত বলে মনে হয়। প্রকৃতিরই হাতে আঁকা এইরকমই একাধিক গ্রাম এখন উঠে আসছে অফবিট ডেস্টিনেশনের তালিকায়। চলতি গরমের ছুটিতে শহুরে দূষণ আর প্যাচপ্যাচে গরম থেকে রেহাই পেতে একবার ঘুরে আসতে পারেন দার্জিলিংয়ের কিছু অচেনা জায়গায়। ভালো লাগবে। দার্জিলিংয়ের আঁকাবাঁকা পথ, ম্যাল, পথের বাঁকে ছোটো ছোটো ঝর্না আর বরফে মোড়া কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার ফাঁকে এই সব অফবিট স্পটগুলি আপনার নজর কাড়বেই। সিবুলেটিনের পক্ষ থেকে রইল দার্জিলিং এর কাছাকাছি সেরা পাঁচটি অফবিট জায়গার হদিস-
লেপচাজগৎ

দার্জিলিঙের অফবিট জায়গাগুলোর মধ্যে সেরা হল লেপচাজগৎ। পাইন গাছের বনের মধ্যে কুয়াশার মত সাদা মেঘের আনাগোনার জগৎই হল লেপচা জগৎ। শুধু পাইন নয়, ওক ও রডোডেনড্রন গাছের সমারোহ দেখতে পাওয়া যায় এখানে। উপরন্তু পরিষ্কার আকাশ আর ভাগ্যে যদি থাকে তবে কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখাও মিলতে পারে। জানা অজানা অনেক ধরনের ফুল চোখে পড়ে লেপচাজগতে। শুধু ফুল নয়, অনেক বিরল প্রজাতির পাখিও দেখা যায় এখানে, যেমন- ফায়ার টেলড, সানবার্ড প্রভৃতি। আর রয়েছে পাহাড়ের গায়ে সবুজে ঘেরা চা বাগান। লেপচাজগৎ ঠিক যেন একটা মায়ার জগৎ যা আস্বাদন করতে চাইলে একবার ঘুরে আসতে হবে।
তিনচুলে

শৈলশহরের থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে ছোট্ট একটি নির্জন পাহাড়ি গ্রাম তিনচুলে। ‘চুলে’ শব্দের অর্থ হল উনুন। তিনচুলেকে ঘিরে রয়েছে উপুড় করা উনুনের মত তিনটি পাহাড়। তাই এমন নাম। তিনচুলে হল ‘হিডেন জেমস্’। সবুজে মোড়া এই গ্রাম আপনার হৃদয় ছুঁয়ে যাবে। দিগন্ত বিস্তৃত ঢেউ খেলানো চা বাগান, হঠাৎ করে জাপটে ধরা মেঘ, কুয়াশার সঙ্গে মেঘের খুনসুটি, কমলালেবুর বাগান, তিনচুলে মনাস্ট্রি, দু-দুটো ভিউপয়েন্ট- কি নেই এখানে! লম্বা লিস্ট। অন্তত দিন দুয়েক তো আপনাকে বেঁধে রাখবেই। তিনচুলে আর গুমবাদারা ভিউপয়েন্টে দাঁড়িয়ে পাহাড়ের ওপারে কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরুপ শোভায় সকালের আড়মোড়া ভাঙবে। একঘেয়েমি দার্জিলিং কালিম্পং ছেড়ে একবার তাই ঘুরে আসতে পারেন তিনচুলে।
মিরিক

পাহাড়ের কোলে ছবির মত সুন্দর করে সাজানো একটি জায়গা হল মিরিক। সামেন্দু হ্রদ হল মিরিকের মূল প্রানকেন্দ্র। এই হ্রদের একদিকের পাইন গাছের বন আর অন্যদিকের বাগানকে যুক্ত করেছে রামধনু সেতু। হ্রদ্রের জলে বোটে করে ঘোরা যায়। শুধু প্রাকৃতিক দৃশ্যই নয়, এখানকার সুন্দর মনোরম আবহাওয়াও পর্যটকদের আকর্ষণের অন্যতম কারন। সামেন্দু হ্রদ ছাড়াও মিরিক চা বাগান, বোকার মনেস্ট্রি, বংকুলুং, রামেটায় ধারা ইত্যাদি জায়গাগুলিও পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠছে।
তাকদাহ

চা বাগান ও অর্কিড কেন্দ্র হল তাকদহের মূল আকর্ষণ। তাকদাহ থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায় না। কিন্তু চারিদিকে যতদুর চোখ যায় দিগন্ত বিস্তৃত ঘন চা বাগিচা দেখতে পাওয়া যায়। নৈসর্গিক সৌন্দর্য্য তাকদার অন্যতম আকর্ষণ। এখান থেকে মাত্র ৩-৪ কিলোমিটার গেলেই তিনচুলে। আর একটি অফবিট ডেস্টিনেশন। দুচোখ ভরে কাঞ্চনজঙ্ঘাকে দেখার সেরা জাযগা এই তিনচুলে। তাকদাহের টি এস্টেট ও অর্কিড সেন্টারগুলো ঘুরে দেখলে আপনার অন্যরকম অনুভূতি হবে। কুয়াশায় ঘেরা পাইন বনের মধ্যে দিয়ে হেঁটে বেড়ানো অদ্ভুত রোমাঞ্চকতার সৃষ্টি করে। এখানে তিস্তা ও রঙ্গিত নদীর সঙ্গমস্থল দেখা যায়। অর্কিড সেন্টার, চা বাগান, লাভথার্স মিলন স্থল, পুমং বারবোটে ঝুলন্ত সেতু তাকদাহের বিশেষ আকর্ষণ।
লামাহাটা

কুয়াশা ও মেঘের সংমিশ্রণে অপূর্ব সৌন্দর্য্যে ভরপুর দার্জিলিংয়ের অন্যতম অফবিট জায়গা লামাহাটা। মেঘ যেন হাত দিয়ে ছোঁয়া যায় এখানে। চারিদিকে ওক, পাইনের জঙ্গল আর চা-বাগান লামাহাটার সৌন্দর্যকে দ্বিগুন বাড়িয়ে দিয়েছে। লামাহাটা খুব ছোট, শান্ত একটি গ্রাম। যারা শহরের কোলাহল থেকে দুদিনের জন্য রেহাই পেতে চান, তারা ঘুরে আসতে পারেন লামাহাটা। লামাহাটার পার্ক এবং সুন্দর সাজানো বাগান এখানকার মূল আকর্ষণের কারন। অর্কিডের বাগানে ঘুরে মন ভালো হয়ে যায়। মার্চ থেকে মে এবং অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর হল লামাহাটা ঘোরার উপযুক্ত সময়।