Sundarban Tourism: চলতি বর্ষায় সুন্দরবনের জঙ্গল ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন? মন টানছে ম্যানগ্রোভ আর সুন্দরবনের বৃষ্টিমাখা ঘন সবুজ প্রকৃতি? তাহলে আর দেরি না করে প্ল্যান এখনই বাতিল করুন। বন দপ্তরের তরফ থেকে পর্যটকদের জন্য সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে সুন্দরবন টাইগার রিসার্ভ। ফলে এই বর্ষার মরশুমে জঙ্গলে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা থাকলে তা এখনই বাতিল করে দেওয়া ভালো।
আগামী ১৫ জুন থেকে শুরু করে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে এই নিষেধাজ্ঞা। এই নিয়ে টানা তিন বছর সুন্দরবনে জারি করা হল এই নিষেধাজ্ঞা। তবে বন্যপ্রাণীদের সুরক্ষার কথা বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শুধু সুন্দরবন নয়, এই ক’মাসের জন্য দেশের সমস্ত জঙ্গলেই পর্যটকদের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। বন্ধ হচ্ছে উত্তরবঙ্গের বক্সা, গরুমারা, জলদাপাড়া, চাপরামারি জঙ্গলও।
কেন এই নিষেধাজ্ঞা? আসলে, বর্ষার এই তিন মাস হল বন্যপ্রাণীদের প্রজননকাল। এই সময়টাতেই পশুপাখিদের মিলন ও বংশবৃদ্ধির প্রধান সময় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তাই পরিবেশকে শান্ত ও সুরক্ষিত রাখতে এবং বন্যপ্রাণীদের প্রাকৃতিক ছন্দ বজায় রাখতে নেওয়া হয়েছে এই সিদ্ধান্ত। এই তিন মাস জঙ্গলের বাঘ, হরিণ, কুমির, সাপ এবং কচ্ছপের মতো বন্যপ্রাণীরা মিলন বা ডিম পাড়ার মত প্রক্রিয়া চালায়। জঙ্গলের উপকূলবর্তী এবং নদীতীরবর্তী অঞ্চলগুলি হল তাঁদের প্রধান পছন্দের জায়গা।
আরও পড়ুন –
তৎকাল টিকিট বুকিংয়ে জালিয়াতি রুখতে কড়া ব্যবস্থা রেলের, আসছে আধার ই-অথেনটিকেশন
এইসময়, জঙ্গলের ভিতরে মানুষের চলাচলে বন্যপ্রাণীরা বিরক্ত হয়। হঠাৎ শব্দ, ফ্ল্যাশ লাইট, দূষণ- সব কিছু মিলিয়ে তাদের স্বাভাবিক প্রজনন ব্যাহত হতে পারে। তাই নিয়ম করে প্রতি বছর বর্ষার সময় তিন মাস বন্ধ রাখা হয় জঙ্গলে পর্যটন। বলা বাহুল্য, ইন্টিগ্রেটেড রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান অনুযায়ী প্রত্যেকটা জঙ্গলের কোর এরিয়াতে মানুষের প্রবেশ এমনিতেই বরাবরের জন্য সীমিত। কিন্তু বর্ষার সময় সেই বিধিনিষেধ আরও কড়াকড়ি করা হয়। নজরদারি বাড়ানো হয় জঙ্গলের প্রতিটি পয়েন্টে।
সুন্দরবন জীববৈচিত্র সমৃদ্ধ অঞ্চল। এটি ইউনেস্কো ঘোষিত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের অন্তর্গত। এখানেই দেখতে পাওয়া যায় ম্যানগ্রোভ অরণ্য এবং পৃথিবীখ্যাত রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। ছাড়া রয়েছে অসংখ্য প্রজাতির পাখি ও প্রাণী। জঙ্গল জুড়ে আঁকাবাঁকা খাঁড়ি আর নদীর জলে আনাগোনা বাড়ে বন্যপ্রাণীদের। তাই কেউ যদি এই সময়ে সুন্দরবনে ঘুরে আসার কথা ভাবেন, তাহলে একটু অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। সেপ্টেম্বরের পরেই আবার খুলে যাবে প্রাকৃতিক বিপণির দরজা। তখন ফের মিলবে সবুজ ঘেরা গহিনের ডাক।