চলে গেলেন ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।
স্থানীয় সময় সোমবার সকাল ৭টা বেজে ৩৫ মিনিটে ভ্যাটিকানে তাঁর নিজের বাসভবন কাসা সান্টা মার্টায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
ভ্যাটিকানের তরফে প্রকাশিত একটি ভিডিয়োবার্তায় কার্ডিনাল ফারেল তাঁর মৃত্যুর খবর বিশ্ববাসীকে জানান।
বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীর কাছে তিনি ছিলেন আধ্যাত্মিক পথপ্রদর্শক। দীর্ঘ ১২ বছর ধরে রোমান ক্যাথলিক চার্চের দায়িত্বপালনকালে নানান শারীরিক সমস্যায় ভুগেছেন রোমান ক্যাথলিক গির্জার এই প্রধান।
আশ্চর্যের বিষয়, মৃত্যুর মাত্র এক দিন আগেই পোপ ফ্রান্সিস ইস্টারের দিনে হাজার হাজার মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে বার্তা দিয়েছিলেন। সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকার ব্যালকনি থেকে তিনি শান্তির ডাক দিয়েছিলেন। গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির কথা তিনি পুনরায় স্মরণ করিয়ে দেন।
কিন্তু ভিতরে ভিতরে শরীরটা তখন আর আগের মতো ছিল না। গত কয়েক মাসে তাঁকে একাধিকবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস, রক্তে অনুচক্রিকার ঘাটতি- সব মিলিয়ে একসময় দেহে ব্লাড ট্রান্সফিউশনও করতে হয়েছিল। কিছু দিন আগে রোমের গেমেলি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান তিনি, তারপর থেকেই ভ্যাটিক্যানে নিজের ঘরেই ছিলেন।
২০১৩ সালে পোপ ষোড়শ বেনেডিক্ট অসুস্থতার কারণে পদ ছেড়ে দিলে তিনি পোপ হিসাবে নির্বাচিত হন। নতুন নাম রাখেন ফ্রান্সিস। পোপ ফ্রান্সিসের আগের নাম ছিল জর্জ মারিও বারগোগ্লিও। তিনি ছিলেন দক্ষিণ আমেরিকার কোন দেশ থেকে নির্বাচিত হওয়া প্রথম পোপ।
পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকপ্রকাশ করেছেন বিশ্বনেতারা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, সমাজমাধ্যমে পোপ ফ্রান্সিসের পুরনো কয়েকটি ছবি শেয়ার করে শোকপ্রকাশ করেছেন। গত বছর ইতালিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল জি-৭ বৈঠক। সেখানে তাঁর দেখা হয়েছিল পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘ পোপ ফ্রান্সিসকে সারা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে সর্বদা করুণা, নম্রতা এবং আধ্যাত্মিক সাহসের এক আলোকবর্তিকা হিসেবে স্মরণ করা হবে। ছোটবেলা থেকেই তিনি প্রভু খ্রিস্টের আদর্শ বাস্তবায়নে নিজেকে নিবেদিতপ্রাণ করেছিলেন। তিনি দরিদ্র ও নিপীড়িতদের সেবায় নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন। যারা কষ্টে ছিলেন তাদের জন্য তিনি আশার আলো জাগিয়েছিলেন।’
পোপের মৃত্যু শুধু একজন ধর্মনেতার বিদায় নয়-এ এক যুগের অবসান।