জিলিপি, সিঙ্গাড়া জাতীয় বেশ কিছু মুখরোচক খাবার নিয়ে সম্প্রতি একটি নির্দেশিকা জারি করেছিল কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীনস্থ ‘অয়েল এ্যান্ড ফ্যাট বোর্ড’। তবে সেই নির্দেশিকা ঘিরে সংবাদমাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক খবর ছড়ায়। শোরগোল পড়ে যায় বিভিন্ন মহলে। তারপরই স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পক্ষ থেকে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়া হয় এ নিয়ে।
বলা হয়, কচুরি, সিঙ্গাড়া, জিলিপি, পকোড়া, বড়া পাও, লাড্ডুর মত ভারতীয় স্ট্রিট ফুড সংস্কৃতিকে টার্গেট করে কোনো নির্দেশিকা জারি করা হয়নি স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পক্ষ থেকে। এইসব খাবার নিয়ে কেবলমাত্র সাধারণ সতর্কতার কথাই বলা হয়েছে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে যে বিভ্রান্তিমূলক খবর ছড়িয়েছে তা সঠিক নয় বলে জানিয়েছে সরকার।
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বক্তব্য অনুযায়ী, ভারতীয় খাদ্য সংস্কৃতিতে কোনও স্ট্রিট ফুডের নাম করে কিছু বলা হয় নি। ভারতীয় স্ট্রিট ফুডের ঐতিহ্য অনেক পুরোনো। তবে স্বাস্থ্যের পক্ষে তা ক্ষতিকর হতে পারে বোঝাতেই শুধু সতর্ক করা হয়েছে মাত্র। কর্মস্থলে যাতে মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ে সেই উদ্দেশ্যেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন – বিপুল অভিজ্ঞতা নিয়ে পৃথিবীতে ফিরলেন ভারতীয় নভোশ্চর শুভাংশু শুক্লা, সামনে এবার মিশন গগনযান
এর আগে এইমস নাগপুর সহ কেন্দ্রীয় সরকারের আওতাধীন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের লবি, ক্যান্টিন, ক্যাফেটেরিয়া এবং মিটিং রুমে সতর্কতামূলক বোর্ড ঝোলাতে হবে বলে জানা গিয়েছিল। সেই বোর্ডে থাকবে বলা হয়েছিল নিত্যদিনের স্ন্যাক্স জাতীয় খাবারের তালিকা এবং তাদের ক্ষতিকারক দিক। স্পষ্ট করে লেখার কথা বলা হয়েছিল কোন খাবারে ঠিক কতটা পরিমাণে শর্করা এবং ফ্যাট রয়েছে। সেই তালিকায় সিঙ্গাড়া, জিলিপি, পকোড়া, বড়া পাও, লাড্ডু, কোল্ড ড্রিঙ্কস এমনকি চা বিস্কুটের মতো সব জনপ্রিয় এবং মুখরোচক খাবারের নাম থাকবে বলে জানা গিয়েছিল।
আরও পড়ুন – নিলামে উঠছে পৃথিবীতে পাওয়া মঙ্গল গ্রহের সবথেকে বড় উল্কাপিণ্ড, কত দাম হতে পারে?
তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ব্যাখ্যা, এই বোর্ড ঝোলানোর পিছনে প্রকৃত উদ্দেশ্য ছিল মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। খাবারের মধ্যে থাকা বাড়তি চিনি এবং তেল সমন্ধে মানুষকে পরামর্শ দেওয়া এবং তা যে শরীরে ক্ষতি করতে পারে সেটা বোঝাতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। বিশেষ কোনো খাবারকে নিশানা করে নির্দেশিকায় কিছু বলা হয়নি।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অত্যধিক তেল ও চিনিযুক্ত খাবার স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্রমশ বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। এই ধরনের খাবার গ্রহণের ফলে মানুষের মধ্যে যেমন ডায়াবেটিসের মত রোগ বাড়ছে, তেমনই হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাও বাড়ছে। পাশাপাশি অনেকেই স্থূলতারও (ওবেসিটি) শিকার হচ্ছেন, যা চুপিসাড়ে শরীরের ক্ষতি করছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রক তরফে বক্তব্য, এই বোর্ডগুলি টানানোর উদ্দেশ্য, ডায়াবেটিস বা স্থূলতার মতো সমস্যাগুলি মানুষ কিভাবে মোকাবিলা করবে তা মনে করিয়ে দেওয়া।