Friday, October 17

কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোয় এই তিন জিনিস একেবারেই এড়িয়ে চলুন, দেবী অসন্তুষ্ট হন বলেই প্রচলিত বিশ্বাস

কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোয় এই তিন জিনিস একেবারেই এড়িয়ে চলুন, দেবী অসন্তুষ্ট হন বলেই প্রচলিত বিশ্বাস
কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো ২০২৫। গ্রাফিক- সিবুলেটিন ডট কম।

কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোয় কি কি এড়িয়ে চলবেন

শারদীয়া দুর্গাপুজোর চারদিন পরেই হয় কোজাগরী লক্ষ্মী পূজো। আশ্বিন মাসের শেষ পূর্ণিমা তিথিতে বাংলার ঘরে ঘরে মহা ধুমধাম করে দেবীর আরাধনা করা হয়। মা লক্ষ্মী হলেন ঐশ্বর্য, সম্পদ, সৌভাগ্য আর সমৃদ্ধির দেবী। সাধারণত গৃহস্থ বাঙালি বাড়িতে প্রায় সারা বছরই বৃহস্পতিবার করে মা লক্ষ্মীর পুজো অর্চনা করা হয়। তবে দুর্গোৎসবের পর কোজাগরী পূর্ণিমা তিথিতে লক্ষ্মীর যে আরাধনা করা হয়, তার মাহাত্ম্য একেবারেই আলাদা। কথিত আছে কোজাগরী পূর্ণিমার দিন দেবী লক্ষ্মী মর্ত্যে নেমে আসেন এবং ভক্তদের আশীর্বাদ করেন। বৃহস্পতিবারের পুজো সকাল থেকে করা হলেও কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো কিন্তু সন্ধ্যের পর করাই রীতি। এই দিন প্রদীপ জ্বেলে বাড়ির দরজা খুলে রেখে যাঁরা দেবীর পুজো করেন, মা লক্ষ্মী সেই ঘরে বিরাজ করেন। কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর মাহাত্ম্য এখানেই। কোজাগরী শব্দের অর্থ হল ‘কো জাগতি’ অর্থাৎ ‘কে জেগে আছো’। সেই থেকেই রাত জেগে দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা করাই আচার।

কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোয় পরিবারের মঙ্গলার্থে গৃহস্থ বাঙালি ঘরের বধূরা সারাদিন উপবাস করে মা লক্ষ্মীর পূজা করেন। পুজোয় মা লক্ষ্মী প্রসন্ন হলে বিশ্বাস সংসারের শ্রীবৃদ্ধি ঘটে। উপচে পড়ে ধনসম্পদ আর ঐশ্বর্যে। তবে দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা করতে গেলে বিশেষ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। নাহলে দেবী নাকি ঘরে অধিষ্ঠান করেন না। কি সেই নিয়ম? লক্ষ্মী পুজোয় কি কি করা একেবারেই নিষেধ? জেনে নিন বিষয়গুলি।

কোজাগরী পূর্ণিমায় লক্ষ্মী পূজা

আশ্বিন পূর্ণিমার কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো

কাঁসর বা ঘণ্টা

লক্ষ্মী পুজোয় কাঁসর বা ঘণ্টা বাজানো নিষিদ্ধ বলে ধরা হয়। এই নিয়মের কারণও আছে। পুরাণ অনুসারে ঘণ্টাকর্ণ নামে এক দেবতা দেবী লক্ষ্মীর প্রতি একবার অপমাণজনক আচরণ করেছিলেন। সেই থেকে দেবী ঘন্টাকর্ণের প্রতি রুষ্ট। লক্ষ্মী পুজোয় তাই যে বাড়িতে ঘন্টা বাজানো হয় মা লক্ষ্মী সেই সংসারে পা রাখেন না বলেই বিশ্বাস। পুজোয় শুধু শাঁখ বাজিয়ে মায়ের আরাধনা করুন।

সতীন তুলসী

আবার, তুলসী পাতাকে দেবী লক্ষ্মীর সতীন বলে মানা হয়। কারণ, তুলসী পাতা নারায়ণ পুজোয় নিবেদন করা হয়। তাই লক্ষ্মী পুজোর সময় তুলসী পাতার ব্যবহার নিষেধ। মা লক্ষ্মীর পুজো সম্পন্ন হয়ে গেলে ফুল এবং তুলসিপাতা দিয়ে নারায়ণকে পুজো করতে হয়।

অলক্ষ্মী লোহা বা স্টিলের বাসন

লক্ষ্মী পুজোয় লোহা বা স্টিলের বাসন ব্যবহার করতে বারণ করা হয়েছে। কারণ, লোহা বা স্টিল ব্যবহার করা হয় অলক্ষ্মী পুজোয়। তাই লোহা থাকলে মা লক্ষ্মী সেই ঘর ত্যাগ করেন।

কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর সঠিক সময়

কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর সঠিক সময় হল প্রদোষকাল অর্থাৎ সন্ধ্যাবেলা। রাত জেগেই এই পুজো করার রীতি। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, সূর্যাস্তের পরেই দেবী লক্ষ্মী মর্ত্যে নেমে এসে গৃহস্থ বাঙালি বাড়ি ঘুরে দেখেন কোথায় রাত জেগে তাঁর আরাধনা করা হচ্ছে। তাই পঞ্জিকা অনুযায়ী পুজোর সময় অনুসরণ করে দেবীর আরাধনা করুন। এবছর

এছাড়া, কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোয় লক্ষ্মীর ঘটের পাশে দেবীর পা এঁকে তবে পুজো শুরু করতে হয়। পুজোর সময় পাশে তামার পাত্রে একটু জলও রাখুন। এই জল সূর্য দেবতাকে অর্পণ করার জন্য রাখার নিয়ম।সূর্য হল সকল শক্তির উৎস। তাঁকে ছাড়া পৃথিবী অন্ধকার। আর এক কথা, লক্ষ্মী পুজোর দিন ঘরে আলপনা দিতে কিন্তু ভুলবেন না।

ডিসক্লেমার: ধর্মীয় বিশ্বাস যে যার নিজস্ব। এই বিষয়ে সিবুলেটিন ডট কম-এর কোনো মতামত নেই। প্রতিবেদনে দেওয়া তথ্য ও পরামর্শ প্রয়োগ করার আগে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।