Sunday, December 21

বিনোদন

বাস কন্ডাক্টর থেকে ভারতীয় সিনেমার মেগাস্টার, কিভাবে হয়েছিল মহাতারকা রজনীকান্তের উত্থান?

বাবার পেনশনের টাকায় সংসার চালানো কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। বেঙ্গালুরু এবং মাদ্রাজ শহরে সেসময় তিনি যা কাজ পাচ্ছিলেন তাই করা শুরু করেন। এমনকি শহরে কুলি-মিস্ত্রির কাজ করতেও তিনি পিছপা হননি।
বাস কন্ডাক্টর থেকে ভারতীয় সিনেমার মেগাস্টার, কিভাবে হয়েছিল মহাতারকা রজনীকান্তের উত্থান?
ভারতীয় সিনেমার মেগাস্টার রজনীকান্ত। ছবি- ইনস্টাগ্রাম।

ভারতীয় সিনেমার মেগাস্টার রজনীকান্ত

ক্ষিণী তারকা রজনীকান্তকে নিয়ে যতই বলা হোক না কেন কম বলা হবে। তিনি ভারতীয় সিনেমার মেগাস্টার। সিনে দুনিয়ায় তাঁর উত্থান রূপকথাকেও হার মানায়। ভারতীয় সিনেমা জগতে রজনীকান্তের প্রভাব এতটাই যে, তাঁর সিনেমা মুক্তি মানেই বক্স অফিস হিট। অথচ রুপোলি জগতের বাইরে এই মানুষটা আদ্যোপান্ত একটি সাধারণ মানুষ। অপার বৈভব্য, সাফল্য আর নাম-জৌলুসের ভার তিনি কখনোই কাঁধে নিয়ে বেড়াননি। শ্রেষ্ঠ হয়েও তাই তিনি ‘আমআদমি’র মত। তিনি কোটি কোটি দর্শকের ‘মনের মানুষ’, রজনীকান্ত। আজ ১২ ডিসেম্বর তাঁর ৭৫তম জন্মদিন।

১৯৫০ সালের বেঙ্গালুরুর একটি মারাঠি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ভারতীয় সিনেমার মেগাস্টার রজনীকান্ত। তাঁর জন্মনাম ছিল শিবাজী রাও গায়কোয়াড়। বাবা রামজী রাও গায়কোয়াড় ছিলেন পুলিশ কনস্টেবল। বাবা যখন চাকরি থেকে অবসর নেন, রজনীকান্তের বয়স তখন সবেমাত্র ৬। তাই ৬ বছর বয়সে তিনি স্কুলের পাঠ শুরু করেন। এই স্কুলে পড়ার সময় কাছেরই একটি রামকৃষ্ণ মঠে মহাভারতের ‘একলব্য’-এর বন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করে সকলের প্রশংসা অর্জন করেন তিনি। এছাড়া স্কুলে পড়ার সময় তিনি বিভিন্ন নাটকেও অভিনয় শুরু করেন। স্কুলের পাঠ্য শেষ করার পরপরই রজনীকান্তকে পরিবারের দায়িত্ব নিতে হয়। বাবার পেনশনের টাকায় সংসার চালানো কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। বেঙ্গালুরু এবং মাদ্রাজ শহরে সেসময় তিনি যা কাজ পাচ্ছিলেন তাই করা শুরু করেন। এমনকি শহরে কুলি-মিস্ত্রির কাজ করতেও তিনি পিছপা হননি। এরপর বেঙ্গালুরু ট্রান্সপোর্ট ডিপার্টমেন্টের বাস কন্ডাক্টরের একটি কাজ জুটে যায় তাঁর। তবে কাজ জুটলেও নাটক অভিনয় তিনি ছাড়েননি। চাকরির ফাঁকেই চলতে থাকে অভিনয়ের প্রচেষ্টা। ছোটখাট পৌরাণিক চরিত্রে সেসময় তিনি অভিনয় করেছিলেন। এমনকি কন্ডাক্টরি করার সময় বাসের মধ্যে বিভিন্ন রকম কায়দাকানুন, কৌশল দেখিয়ে যাত্রীদের মনোরঞ্জন করতেন। শোনা যায়, বাসে তাঁর টিকিট ছেঁড়ার ভঙ্গি আর স্টাইল দেখার জন্য বহু যাত্রীরা তাঁর বাসেই ওঠার অপেক্ষায় থাকতেন।

অভিনয় যে তাঁর স্বপ্ন ছিল, তা তিনি কোনোদিন হারিয়ে যেতে দেননি। এরপর নিজের স্বপ্নকে সত্যি করার জন্য তিনি উঠেপড়ে লাগেন। ভালো অভিনয় শেখার জন্য এবার তিনি ভর্তি হলেন মাদ্রাজ ফিল্ম ইনস্টিটিউটে। তবে তাঁর এই পদক্ষেপে পরিবার সমর্থন করেননি। কেবল বন্ধুদের দেওয়া উৎসাহ ও ‘অর্থসাহায্য’ সম্বল করে ইনস্টিটিউটে ভর্তি হলেন তিনি। এখানেই তাঁর পরিচয় হয় তামিল ফিল্ম পরিচালক কে বালাচন্দ্রের সঙ্গে। এই বালাচন্দ্রেরই পরিচালনায় ‘অপূর্ব রাগাঙ্গল’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমেই অভিষেক ঘটে ভারতীয় সিনেমার মেগাস্টার রজনীকান্তের। বাকিটা ইতিহাস।

রজনীকান্ত সম্পর্কে কে বলেছিলেন, ‘এ সেই রজনীকান্ত নয় যাকে আমি সিনেমা জগতে নিয়ে এসেছিলাম। নিজের প্রচেষ্টা এবং অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমেই ও এই জায়গায় এসেছে। আমি তো শুধু তাঁকে সুযোগ করে দিয়েছিলাম এবং সিনেমা জগতের পথ দেখিয়ে দিয়েছিলাম। সেই পথ ধরেই সে গিয়েছে এবং উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছেছে।’

 

তথ্যসূত্র– উইকিপেডিয়া

আরও পড়ুন – দেখুন ‘ধুরন্ধর’ খ্যাত সারা অর্জুনের ১০টি ভাইরাল লুক

ফলো করুণ-