Saturday, October 18

বিনোদন

Mahavatar Narsimha: ভারতীয় অ্যানিমেশন ছবির জগতে মাইলফলক ‘মহাবতার নরসিংহ’, ঢুকে পড়ল ১০০ কোটির ক্লাবে

Mahavatar Narsimha: ভারতীয় অ্যানিমেশন ছবির জগতে মাইলফলক 'মহাবতার নরসিংহ', ঢুকে পড়ল ১০০ কোটির ক্লাবে
১০০ কোটির ক্লাবে। ছবি- হোম্বলে ফিল্মস/ ইন্সটাগ্রাম।

Mahavatar Narsimha

ভারত তথা বিশ্বের অন্যতম আলোচিত এবং দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ আয়কারী এ্যানিমেটেড ছবি হিসাবে ‘মহাবতার নরসিংহ’ নজির সৃষ্টি করেছে। ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে এক নতুন যুগের সূচনা করেছে এই ছবি। ভগবান বিষ্ণুর নৃসিংহ অবতারের কাহিনী অবলম্বনে নির্মিত এই ছবি মুক্তি পেয়েছিল গত ২৫ জুলাই। মাত্র দু সপ্তাহের মধ্যে ১০০ কোটির ব্যবসা করে ইতোমধ্যেই রেকর্ড গড়েছে।

সাম্প্রতিককালে ‘সাইয়ারা’ ছাড়া আর কোনও ছবির নাম যদি শিরোনামে আসে তা হল ‘মহাবতার নরসিংহ’। অ্যানিমেশন ফিল্মের জগতে এই ছবি ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ তকমায় বক্স অফিসে দারুণভাবে টিকে আছে। অন্তত এখনো অবধি। এটা কিন্তু কম গর্বের বিষয় নয়। দেশের মাটিতে এবং দেশীয় সংস্কৃতির আধারে নির্মিত অ্যানিমেশন ছবির এই অভূতপূর্ব সাফল্য একেবারে নজিরবিহীন।

অশ্বিনী কুমার পরিচালিত ‘মহাবতার নরসিংহ’ আদতে একটি পৌরাণিক অ্যাকশন ড্রামা। মোট সাতটি পর্বের ‘মহাবতার সিনেমাটিক ইউনিভার্স’-এর  প্রথম অধ্যায়। ছবিটি উপস্থাপন করেছে হোম্বলে ফিল্মস। হোম্বলে ফিল্মস ইতিমধ্যে তাদের ‘কেজিএফ’, ‘কান্তারা’ এবং ‘সালার’-এর মত ছবির জন্য যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছে। ২০০৫ সালের অশ্বিনী কুমার পরিচালিত ‘হনুমান’ ছবির পর ‘মহাবতার নরসিংহ’ হিন্দি চলচ্চিত্র হিসেবে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে নিমেষেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এর নেপথ্যে রয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির উপর দাঁড়িয়ে পৌরাণিক ঘটনাগুলির বড় পর্দায় জীবন্ত হয়ে ওঠার কাহিনী।

বলা বাহুল্য, ‘মহাবতার নরসিংহ’ এখন শুধুমাত্র আর শিশুদের চিত্ত-বিনোদনের গল্পকথা নয়, এটি এখন পৌরাণিক কাহিনী অবলম্বনে চিত্রিত এক সাংস্কৃতিক বিপ্লবের হাতিয়ার। একটি অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র যখন সাধারণ ছবির লাইভ অ্যাকশনের মত করে অত্যন্ত যত্ন এবং আবেগের সঙ্গে বানানো হয় তখন সে সমস্ত গণ্ডি ছড়িয়ে যেতে পারে। ‘মহাবতার নরসিং’এর ক্ষেত্রে সেটাই হয়েছে। এই ছবিতে অসাধারণ কায়দায় চিত্রিত হয়েছে দৈত্যরাজ হিরণ্যকশিপুর গল্প এবং তার পুত্র প্রহ্লাদের ভগবান বিষ্ণুর প্রতি একনিষ্ঠ ভক্ত হয়ে ওঠার পৌরাণিক আখ্যান।

আরও পড়ুন – ‘ধূমকেতু’ ছবি নিয়ে এত ‘উন্মাদনা’র নেপথ্যে কি শুধুই দেব-শুভশ্রী?

মাত্র ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হলেও এই ছবির বক্স অফিস কালেকশনে বাজিমাত করেছে। ‘সাচনিক’-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, মুক্তির দিন এই ছবি ১.৭৫ কোটি টাকা আয় করেছিল। তারপর ধীরে ধীরে কালেকশন আরো বেড়েছে। দ্বিতীয় দিনে ছবির সংগ্রহে ছিল ৪.৬ কোটি টাকা। ছবিটি তৃতীয় দিনে ৯.৫ কোটি, চতুর্থ দিনে ৬ কোটি, পঞ্চম দিনে ৭.৭ কোটি, ষষ্ঠ দিনেও ৭.৭ কোটি, সপ্তম দিনে ৭.৫ কোটি, অষ্টম দিনে ৭.৭ কোটি, নবম দিনে ১৫.৪ কোটি এবং দশম দিনে রেকর্ড ২৩.১ কোটি টাকা আয় করেছিল। আজ চোদ্দ দিনের মাথায় ছবির মোট আয় প্রায় ১১৭ কোটি টাকায় গিয়ে ছুঁয়েছে বলে জানা গেছে।

ভারতের অ্যানিমেশন ছবির দুনিয়ায় ‘মহাবতার নরসিংহ’ একটি মাইলফলক। দেশের মাটিতে তৈরি এই চলচিত্র আন্তর্জাতিক স্তরেও স্বীকৃতিলাভ করেছে। ২০২৪ সালের নভেম্বরে এই ছবি আন্তর্জাতিক চলচিত্র উৎসবে দেখানো হয়েছিল। ‘মহাবতার নরসিংহ’ হল প্রথম ভারতীয় অ্যানিমেশন ছবি যা ১০০ কোটির ক্লাবে প্রবেশ করল।

আরও পড়ুন – Dev-Subhasree Dhumketu: হাতে হাত ধরে ফের দেব-শুভশ্রী জুটি, জমজমাট ‘ধূমকেতু’-র ট্রেলার লঞ্চ ইভেন্ট, দেখুন ছবি

পরিচালক অশ্বিন কুমার জানিয়েছেন, ‘মহাবতার নরসিংহ’ হল ‘মহাবতার সিনেমাটিক ইউনিভার্স’ (MCU)-এর প্রথম ছবি। বিষ্ণুর দশটি অবতারের উপর ভিত্তি করে তৈরি হবে পরপর সাতটি পৌরাণিক চলচ্চিত্রের একটি সিরিজ। ‘মহাবতার নরসিংহ’ ছবির মাধ্যমে এই সিরিজ শুরু হয়ে বিষ্ণুর কল্কি অবতারকে ঘিরে দুই পর্বের মহাকাব্যিক চলচ্চিত্রের মাধ্যমে এর সমাপ্তি হবে। এই ‘সিনেমাটিক ইউনিভার্স’-এর মূল লক্ষ্য হল দর্শকদেরকে বর্ণময় এ্যানিমেটেড ছবি উপহার দেওয়া। যেখানে পৌরাণিক কাহিনিকে দৃষ্টিনন্দন অ্যানিমেশন ও আধ্যাত্মিক ভাবনার মোড়কে উপস্থাপন করা হবে।

‘মহাবতার সিনেমাটিক ইউনিভার্স’ (MCU)-এর পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী চলচিত্রগুলি হল-

    • মহাবতার পরশুরাম – ২০২৭
    • মহাবতার রঘুনন্দন – ২০২৯
    • মহাবতার দ্বারকাধীশ – ২০৩১
    • মহাবতার গোকুলানন্দ – ২০৩৩
    • মহাবতার কল্কি: পার্ট ১ – ২০৩৫
    • মহাবতার কল্কি: পার্ট ২ – ২০৩৭

তথ্যসূত্র- সাচনিক, উকিপেডিয়া

ফলো করুণ-