Japani Baba Vanga Predictions
গতকাল ৩০ জুলাই, ২০২৫ রাশিয়ার কামচাটকা উপদ্বীপে আঘাত হানে রিখটার স্কেলে ৮.৮ তীব্রতার ভূমিকম্প। ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৯.৩ কিলোমিটার গভীরে।পৃথিবীর ইতিহাসে এখনো পর্যন্ত আঘাত হানা সর্ববৃহৎ ১০টি বিধ্বংসী ভূমিকম্পগুলির মধ্যে এটি অন্যতম। ‘প্রশান্ত সাগরীয় আগ্নেয় মেখলা’ অঞ্চলে সৃষ্ট এই ভূমিকম্প মুহূর্তের মধ্যে জন্ম দেয় সর্পগ্রাসী এক সুনামির। যার প্রভাব সরাসরি গিয়ে আছড়ে পড়ে রাশিয়ার কুরিল দ্বীপপুঞ্জ এবং জাপানের হোক্কাইডোতে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অন্যান্য উপকূলবর্তী এলাকাতে এর প্রভাব পড়েছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের এই ভয়ঙ্করতম আবহের মধ্যে এই মুহূর্তে আবার নতুন করে সামনে চলে এসেছে রিও তাতসুকি তথা জাপানি বাবা ভাঙার ভবিষ্যদ্বাণী। তার করা ভবিষ্যতবাণী আর বাস্তবের মধ্যে কয়েক সপ্তাহের ব্যবধান থাকলেও নতুন করে ছড়িয়েছে আতঙ্ক।
রিও তাতসুকি হলেন জাপানের প্রখ্যাত মাঙ্গা শিল্পী। তিনি নতুন বাবা ভাঙ্গা নামেও পরিচিত। তাতসুকির লেখা “দ্য ফিউচার আই স” বইটিতে তিনি ২০২৫ সালের ৫ জুলাই দক্ষিণ জাপানে একটি ভয়াবহ সুনামির ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। তবে বাস্তবে ওইদিন জাপানে কোন বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি। তবে, তাতসুকির উল্লেখ করা তারিখের মাত্র ২৫ দিন পর কামচাটকার এই ভয়াবহ ভূমিকম্প এবং সুনামি অনেককে আবার ভাবিয়ে তুলেছে। তাতসুকির ভবিষ্যদ্বাণী কি তবে একটি দিন নয়, বরং একটি সময়পর্বের জন্য প্রযোজ্য ছিল? সেই নিয়ে শুরু হয়েছে জোর চর্চা।
আরও পড়ুন – What Happens After Death: ১ ঘণ্টার ‘সাময়িক মৃত্যু’, সেসময় নিজেই দেখলেন নিজের প্রাণহীন শরীরকে
সমাজমাধ্যমে অনেকেই বলছেন, তাতসুকি যেভাবে তার বইতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় এবং ধরন সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন তার সঙ্গে বর্তমানে ঘটা এই বিপর্যয়ের মিল রয়েছে। ঘটনাস্থলের পারস্পরিক সাযুজ্য এতটাই আশ্চর্যজনক যে, এই ঘটনাকে একেবারে কাকতালীয় বলে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। বলা বাহুল্য, এই ভবিষ্যদ্বাণীকে কেন্দ্র করে আগে থেকেই জাপানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। জানা গেছে, জুনের শেষ সপ্তাহ থেকে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত হংকং থেকে জাপান যাওয়ার বিমান টিকিটের বুকিং অস্বাভাবিকভাবে কমেও গিয়েছিল। যা সত্যিই আশ্চর্যজনক।
কামচাটকার ভয়াবহ ভূমিকম্প এবং তারপর সুনামি সেই আতঙ্ককে পুনরায় উস্কে দিয়েছে বলেই মানছেন নেট নাগরিকদের একাংশ। কিন্তু এরপর কি হবে? তাহলে জাপানি বাবা ভাঙার করা প্রফেসি কি সত্যিই বাস্তবে মিলে গেল? গুঞ্জন তুঙ্গে।
তবে বিশেষজ্ঞরা এই সুনামির সঙ্গে তাতসুকির করা মাঙ্গার কোনো সম্পর্ক আছে বলে মানতে নারাজ। টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূকম্পবিদ অধ্যাপক সেকিয়া নাওয়া তাতসুকির ভবিষ্যদ্বাণী সম্পূর্ণ নস্যাৎ করে দিয়ে বলেন, ভূমিকম্প কখন কোথায় হবে, তা কারোর পক্ষে আদৌ নির্ভুলভাবে বলা সম্ভব নয়। তাছাড়া এমন মাঙ্গাভিত্তিক পূর্বাভাসেরও কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
উল্লেখ্য, জাপান সরকারও এর আগে তাতসুকির ভবিষ্যদ্বাণীকে ভিত্তিহীন বলে ঘোষণা করেছিল। যদিও রিও তাতসুকির ভক্তদের দাবি, ২০১১ সালের তোহোকু ভূমিকম্প, প্রিন্স ডায়ানার মৃত্যু এবং কোভিড-১৯ সহ আরও কিছু ঘটনা তিনি পূর্বেই তার মাঙ্গায় উল্লেখ করেছিলেন। তবে সমালোচকরা একে অস্পষ্ট ও কাকতালীয় বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। অবশ্য সত্য-মিথ্যার ঊর্ধ্বে উঠে, রিও তাতসুকির করা ভবিষ্যদ্বাণী এখন ফের আলোচনার কেন্দ্রে।