Thursday, November 27

বিনোদন

ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া ১৯৯৪: বিপক্ষে ঐশ্বর্য রাই, কিভাবে সেদিন মুকুট জিতেছিলেন ১৮ বছরের সুস্মিতা সেন?

১৯৯৪ সালে বিশ্ব সুন্দরীর মুকুট মাথায় পরার আগে ওই একই বছরে ঐশ্বর্য রাই অংশ নিয়েছিলেন ‘ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া ১৯৯৪’-এর মঞ্চে। দেশের ফ্যাশন জগতে তখন ধারণা ছিল একটাই, এই শিরোপা উঠবে ঐশ্বর্যরই মাথায়।
ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া ১৯৯৪: বিপক্ষে ঐশ্বর্য রাই, কিভাবে সেদিন মুকুট জিতেছিলেন ১৮ বছরের সুস্মিতা সেন?
১৯৯৪ সালের বিশ্বজয়ের দুই কন্যা। ছবি- ইনস্টাগ্রাম।

ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া ১৯৯৪

তিনি ঐশ্বর্য রাই বচ্চন। যাঁর রূপ, সৌন্দর্য, লাবণ্য আজও মুগ্ধ করে এই প্রজন্মের তরুণদের। তাঁর সেই রূপের স্বীকৃতি তিনি পেয়েছিলেন অনেক আগেই। ১৯৯৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার সান সিটিতে। মাত্র ২১ বছর বয়সেই তিনি জিতে নেন ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ প্রতিযোগিতার মুকুট। বিশ্বমঞ্চে তিনি তখন সত্যিকারের ‘বিশ্ব সুন্দরী’। তবে আশ্চর্যের বিষয়, এই খেতাব জয়ের আগে তাঁকে একবার ‘হার’ স্বীকার করতে হয়েছিল দেশের বুকেই অনুষ্ঠিত হওয়া একটি সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায়।

১৯৯৪ সালে বিশ্ব সুন্দরীর মুকুট মাথায় পরার আগে ওই একই বছরে তিনি অংশ নিয়েছিলেন ‘ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া ১৯৯৪’-এর মঞ্চে। দেশের ফ্যাশন জগতে তখন ধারণা ছিল একটাই, এই শিরোপা উঠবে ঐশ্বর্যর মাথায়। কারণ তিনি তখন দেশের অন্যতম সফল সুপারমডেল। ‘ল্যাকমে’ সহ বেশ কয়েকটি বড় ব্র্যান্ডের মুখ তখন তিনি। কনটেস্টে ওঠার আগে অনেকেই তাঁকে ফেভারিট হিসেবে দেখছিলেন। কিন্তু প্রতিযোগিতার মঞ্চে ঘুরে যায় পরিস্থিতি।


ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া ১৯৯৪: বিপক্ষে ঐশ্বর্য রাই, কিভাবে সেদিন মুকুট জিতেছিলেন ১৮ বছরের সুস্মিতা সেন?

ঐশ্বর্য রাই ও সুস্মিতা সেন। ছবি- ইনস্টাগ্রাম

 

‘ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া ১৯৯৪’-এর মুকুট সেদিন জিতে নিয়েছিলেন বলিউডের আর এক প্রতিথাযশ অভিনেত্রী সুস্মিতা সেন। তখন তাঁর বয়স মাত্র ১৮ বছর। সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় তিনি একেবারেই নবাগতা। এতদ সত্ত্বেও, এই অল্প বয়সেই সেদিন তিনি জিতে নেন উপস্থিত বিচারকদের মন। দ্বিতীয় স্থান পেলেন ঐশ্বর্যা রাই। এই শিরোপা হাতছাড়া হওয়ার পর শোনা যায় ঐশ্বর্য নাকি অত্যন্ত ‘ভেঙে’ পড়েছিলেন। যদিও মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, তাঁদের দুজনের মধ্যে কখনও সেরকম কোনো রেষারেষি তৈরি হয়নি।

এরপর দুই প্রতিযোগী ভিন্ন পথ ধরে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পা বাড়ান। সুস্মিতা যান ফিলিপিন্সে ‘মিস ইউনিভার্স ১৯৯৪’-এ যোগদান করতে। আর ঐশ্বর্য রাই দক্ষিণ আফ্রিকায় ‘মিস ওয়ার্ল্ড ১৯৯৪’-এ। বলা বাহুল্য, সে বছর ইতিহাস তৈরি করেছিল ভারতের এই দুই ‘কনিষ্ঠ’ কন্যা। আন্তর্জাতিক মঞ্চে তাঁরা ভারতকে দু-হাতের মত তুলে ধরেছিল শীর্ষে। সে এক বছর!
সেদিন, সে মুহূর্ত আজও স্মরণীয় হয়ে আছে সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার বিশ্বে।

মিস ওয়ার্ল্ড ১৯৯৪-এর মঞ্চে ঐশ্বর্য রাই

ফেরা যাক ‘ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া ১৯৯৪’-এর প্রতিযোগিতার ব্যাকস্টেজে। সেদিন পরিস্থিতি ছিল অন্যরকম। পরিচালক প্রহ্লাদ কক্কর পরবর্তীকালে বিশেষ একটি সাক্ষাৎকারে জানান, সুশ্মিতা সেন প্রতিযোগিতা শুরুর আগে ভেবেছিলেন যে তিনি এই প্রতিযোগিতায় কখনোই জিততে পারবেন না। ঐশ্বর্যর বিপুল জনপ্রিয়তার কারণে তাঁর মনে হয়েছিল, শিরোপা কে জিতবে তা হয়তো আগে থেকেই ঠিক হয়ে গেছে। প্রহ্লাদ কক্কর নাকি সুশ্মিতাকে একবার ব্যকস্টেজে কাঁদতেও দেখেছিলেন। পরে তিনি অবশ্য তাঁকে আশ্বস্ত করেন এবং মঞ্চে তাঁরা সেরাটা দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন।

মিস ইউনিভার্স ১৯৯৪-এর মঞ্চে সুস্মিতা সেন

কক্করের মত অনুযায়ী, ‘ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া ১৯৯৪’-এর মঞ্চে সুস্মিতার জয়ের কারণ স্থির হয়ে যায় প্রশ্নোত্তর পর্বে। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সাবলীল ইংরাজি ভাষায় সুস্মিতার দেওয়া উত্তর প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে তাঁকে অনেকটাই এগিয়ে দিয়েছিল। সেদিক থেকে ঐশ্বর্য সেদিন ‘পিছিয়ে’ পড়েছিলেন। তখন ইংরেজিতে ঐশ্বর্য নাকি তেমন ‘সাবলীল’ ছিলেন না। তিনি কোঙ্কণী বা হিন্দি ভাষায় কথা বলতে বেশি স্বচ্ছন্দ্য বোধ করতেন। এটি অহংকার ছিল না; বরং ভাষাগত আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি। তবে, ঐশ্বর্য এবং সুস্মিতার মধ্যে কখনও এবিষয়ে ব্যক্তিগত বিরোধ দানা বাঁধেনি। নিজের নিজের জগতে তাঁরা ছিলেন স্বমহিমায় উজ্জ্বল।

‘মিস ইন্ডিয়া ১৯৯৪’-এর মঞ্চ সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার ইতিহাসে ‘বিশেষ’ অধ্যায় হিসেবেই চিহ্নিত হয়ে আছে। প্রত্যাশা আর বাস্তবের মাঝে যতটুকু ফারাক, সেটুকুই শিরোপা জয়ের কাহিনী বলে লিপিবদ্ধ হয়েছে। তবে একই মঞ্চ থেকে শুরু হয়েছিল বলিউডের এই দুই অভিনেত্রীর সফর। বাকিটা তো হতিহাস।

 

আরও পড়ুন – কে এই মিস ইউনিভার্স ২০২৫ ফতিমা বোশ?

আরও পড়ুন – মিস ইউনিভার্স ২০২৫: শেষমেষ শিরোপা উঠল মেক্সিকোর মাথায়, টপ ৫এ কারা? মনিকা বিশ্বনাথ থামলেন কোথায় গিয়ে?

ফলো করুণ-