Aurora in Ladakh Sky
লাদাখের আকাশে অরোরা বা মেরুজ্যোতি: প্রায় একবছর আগের ঘটনা। ২০২৪ সালের ১০ মে। লাদাখের আকাশে হঠাৎ দেখা গিয়েছিল আশ্চর্য একটি আলোর খেলা। হতবাক হয়ে গিয়েছিল অনেকেই। এমনকি বিজ্ঞানীরাও তখন বুঝে উঠতে পারেননি এই আলোর উৎস কি।
রঙিন আলোয় ঢেকে গিয়েছিল লাদাখের আকাশ। একাধিকবার দেখা গিয়েছিল সেই আলো। এই আলো সাধারণত পৃথিবীর উত্তর এবং দক্ষিন মেরু অঞ্চলের আকাশে দেখা যায়। যা নর্দার্ন লাইটস নামে পরিচিত। পোশাকি ভাষায় যাকে বলে মেরুজ্যোতি বা মেরুপ্রভা। কিন্তু লাদাখ তো আর মেরুপ্রদেশে অবস্থিত নয়। তাহলে সেখানে রঙিন এই মেরুজ্যোতির দেখা মিলল কিভাবে?
বিশেষজ্ঞরা খোঁজখবর নিতে শুরু করলেন। প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় পর বিজ্ঞানীরা খোঁজ পেলেন লাদাখের আকাশে অরোরা বা মেরুজ্যোতির দেখার কারণ। ঝলমলে এবং বিরল এই দৃশ্যের পিছনে লুকিয়ে থাকা বিজ্ঞানকে টেনে বার করলেন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ অ্যাস্ট্রোফিজিক্স-এর জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
আরও পড়ুন – আবিষ্কার হল নতুন প্রজাতির মাছ, নাম রাখা হল ভারতেরই এক শহরের নামে
বিজ্ঞানীরা বলছেন, লাদাখ অঞ্চলের স্বর্গীয় এই দৃশ্যের কারণ ছিল সূর্যপৃষ্ঠে ঘটা পরপর ৬টি বিরাট বিস্ফোরণ। বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলা হয় করোনাল মাস ইজেকশন বা সংক্ষেপে সিএমই। এই বিস্ফোরণে সূর্যের বাইরের স্তর থেকে বিপুল পরিমাণে প্লাজমা এবং চৌম্বকীয় শক্তি মহাকাশে আছড়ে পড়ে।
সূর্যপৃষ্টে ঘটা পরপর এরকম ছ’টি বিস্ফোরণ ছিল একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। এক বিস্ফোরণ আর এক বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িয়ে শক্তিশালী সৌরঝড়ের সৃষ্টি করেছিল। বিজ্ঞানীদের মতে, এই ধরনের সৌরঝড় যখন তৈরি হয় এবং পৃথিবীর দিকে পরিচালিত হয়, তখন তা তীব্র ভু-চৌম্বকীয় ঝড়ের সৃষ্টি করতে পারে। এই ভু-চৌম্বকীয় ঝড় কৃত্রিম উপগ্রহ, যোগাযোগ ব্যবস্থা এমনকি বিদ্যুৎ গ্রিডকেও প্রভাবিত করতে পারে।
ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ অ্যাস্ট্রোফিজিক্স-এর জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন, সূর্যের এই জিওম্যাগনেটিক স্টর্ম-ই ছিল লাদাখের আকাশে অরোরা বা মেরুজ্যোতির দেখতে পাওয়ার কারণ। প্রায় দুই দশক পরে এই জ্যোতি দেখা গেলেও এর কারণ নিয়ে অনেক ধোঁয়াশা ছিল। বিজ্ঞানীদের প্রচেষ্টায় এবার তা সম্পূর্ণ পরিষ্কার হল।