Sunday, December 21

বিনোদন

ধুরন্ধর ছবির রিভিউ: পেক্ষাগৃহে তুফান কি আদৌ তুলতে পারল রণবীর-অক্ষয়-মাধবনরা?

প্রায় দুবছর পর ধুরন্ধর ছবির মাধ্যমেই বড়পর্দায় ফিরলেন রণবীর। মূলত রোম্যান্টিক হিরো হিসেবে বলিউডে তিনি পরিচিত হলেও, ধুরন্ধর ছবিতে তাঁকে একেবারে নতুন অবতারে দেখা গেছে।
ধুরন্ধর ছবির রিভিউ: পেক্ষাগৃহে তুফান কি আদৌ তুলতে পারল রণবীর-অক্ষয়-মাধবনরা?
ধুরন্ধর ছবির রিভিউ- প্রত্যাশ্যা পূরণ হল?

ধুরন্ধর ছবির রিভিউ

*****

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে আজ মুক্তি পেয়েছে রণবীর সিং অভিনীত আদিত্য ধরের স্পাই থ্রিলার ছবি ‘ধুরন্ধর’। একঝাঁক তারকা সম্বলিত এই ছবিতে রণবীর ছাড়া মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন আর মাধবণ, অক্ষয় খান্না, সঞ্জয় দত্ত, অর্জুন রামপাল এবং সারা অর্জুন। ট্রেলার প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই এই ছবির প্রেক্ষাপট এবং চরিত্রদের নিয়ে একরকম কাটাছেঁড়া চলছিল নেটদুনিয়ায়। সমালোচনার পাশাপাশি প্রশংসার ঝড় বইছিল সমাজমাধ্যমে। নানান জটিলতার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে পেক্ষাগৃহে আজ মুক্তি পেয়েছে ছবিটি।

প্রায় দুবছর পর ধুরন্ধর ছবির মাধ্যমেই বড়পর্দায় ফিরলেন রণবীর। মূলত রোম্যান্টিক হিরো হিসেবে বলিউডে তিনি পরিচিত হলেও, ধুরন্ধর ছবিতে তাঁকে একেবারে নতুন অবতারে দেখা গেছে। প্রথম দিন প্রথম শো-তে এই ছবি দেখে দর্শকদের প্রতিক্রিয়া কেমন তা ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমগুলোতে ট্রেন্ডিং হতে শুরু করেছে। আসুন জেনে নেওয়া যাক, দর্শকদের মতে এই ছবি এফডিএফএস পর্যালোচনা অনুসারে কেমন ফল করল।

ধুরন্ধর ছবির রিভিউ: প্লট


ধুরন্ধর ছবির রিভিউ: পেক্ষাগৃহে তুফান কি আদৌ তুলতে পারল রণবীর-অক্ষয়-মাধবনরা?

ছবিতে রণবীর সিং

১৯৯৯ সালের আইসি ৮১৪ বিমান ছিনতাই নিয়ে কান্দাহারে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার ১ দিন আগে থেকে শুরু হয়েছে ছবির কাহিনী। এরপর ২০০১ সালের পার্লামেন্ট আক্রমণ, ২৬/১১ মুম্বই হামলা থেকে করাচির লিয়ারি গ্যাং-এর মত একাধিক ঘটনাবলির খিচুড়ি নিয়ে গড়ে উঠেছে ছবির বিস্তৃত প্লট। এদিকে পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন আইবি প্রধান অজয় সান্যাল। পরিকল্পনা করেন সাঙ্ঘাতিক কিছু করার। দূর্ধর্ষ, অসীম সাহসী এক এজেন্টকে পাকিস্তানের সন্ত্রাসভূমিতে প্রবেশ করান একেবারে নিঃশব্দে। এরপর শুরু হয় ধামাকা। ঘটনার সিকোয়েন্সে টানটান উত্তেজনা আর সাসপেন্সের লড়াই। অজয় সান্যালের পর্ব অতিক্রান্ত হওয়ার পরেই ছবির সিংহভাগ অংশ কেটে যায় করাচির লিয়ারিতে।

ধুরন্ধর ছবির রিভিউ: অভিনয়


ধুরন্ধর ছবির রিভিউ: পেক্ষাগৃহে তুফান কি আদৌ তুলতে পারল রণবীর-অক্ষয়-মাধবনরা?

একঝাঁক তারকা। কে কেমন করল?

 

আগেই জানা গিয়েছিল যে, ‘ধুরন্ধর’ ছবিতে রণবীর সিংয়ের কোডনেম হল ‘ঈশ্বরের ক্রোধ’। বলা বাহুল্য, ছবিতে তাঁর নামের প্রতি সম্পূর্ণ সুবিচার করেছেন তিনি। ৩ ঘন্টা ৩৪ মিনিটের স্ক্রিন টাইমে রণবীরকে স্বমহিমায় অবতীর্ণ হতে দেখা গেছে। এককথায় অনবদ্য অভিনয় করেছেন তিনি। তবে, বলতেই হয়, সারা অর্জুনের সঙ্গে তাঁর অনস্ক্রিন রসায়ন কিন্তু টেকেনি। ছবিকে একরকম প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে এই অধ্যায়। দর্শকদের একাংশের মতে, ‘ধুরন্ধর’ ছবিতে রণবীর-সারা জুটির মুহূর্তগুলো ততটা ছাপ ফেলতে পারেনি, যতটা না পেরেছে তাঁদের স্বতন্ত্র অভিনয়। অনেকটা একঘেঁয়েমি তৈরি করেছে তাঁদের দৃশ্যগুলো, যা দর্শকদের কাছে অপ্রয়োজনীয় বলেই মনে হয়েছে। তবে, ছবিতে সারা অর্জুনকে কিন্তু একেবারেই সাবলীল বলে মনে হয়েছে। তাঁর অভিনয় যথেষ্ট প্রশংসা দাবি রাখে।

পাশাপাশি, যেমন বলা হয়েছে, অজয় সান্যালের চরিত্রে আর মাধবনকে আকর্ষণীয় ভঙ্গিমায় দেখা গেছে। অন্যদিকে করাচি পুলিশের এনকাউন্টার স্পেশালিস্ট ‘এসপি চৌধুরি আসলাম’-এর চরিত্রে সঞ্জয় দত্ত তাঁর সেরাটা দিয়েছেন। লিয়ারিকে সন্ত্রাসমুক্ত করার জন্য যিনি বদ্ধপরিকর। আর অর্জুন রামপাল ট্রেলার মোতাবেক ভয়ংকর। ভারতকে রক্তাক্ত করতে যিনি শপথ নিয়েছেন। তবে, রুপোলি পর্দার ‘মেজর ইকবাল’-এর চরিত্রকে অর্জুন রামপাল প্রত্যশামত জীবন্ত করে তুলেছেন। পোড়খাওয়া অভিনেতা একেই বলে। ট্রেলারে এক ভারতীয় সেনার শরীরে মাছ ধরার বড়শি গেঁথে নৃশংস অত্যাচার করার দৃশ্যটি বড়পর্দায় আরো ভয়াবহ আকারে প্রতীয়মান হয়েছে। শেষে, যাঁর কথা না বললেই নয়, তিনি হলেন লিয়ারির অবিসংবাদিত এবং কুখ্যাত গ্যাংস্টার ‘রেহমান ডাকাইত’-এর ভূমিকায় অক্ষয় খান্না। স্ক্রিনে তিনি রণবীরের মতনই অসাধারণ, আকর্ষণীয়। নিশ্ছিদ্র অভিনয়ে তিনি মাত করেছেন দর্শকদের। তাঁর অভিনয় এবং চরিত্রের আবেগ দিয়ে তিনি দর্শককে বাধ্য করেছেন পেক্ষাগৃহে তাঁর সিটে ‘হাঁ হয়ে’ বসে থাকতে।

ধুরন্ধর ছবির রিভিউ: শেষ কথা

এককথায়, ধুরন্ধর দর্শকদের সীমাহীন প্রত্যাশাকে অনেকটাই পূরণ করেছে। যদিও ট্রেলার মোতাবেক ‘ধুরন্ধর’ তার দর্শকদেরকে প্রকৃত অর্থে মুগ্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে, কারণ ট্রেলারের বেশ কয়েকটি ভিজ্যুয়াল ধুরন্ধর পার্ট ১-এর অনর্গতই নয়। ছবির দ্বিতীয় পার্ট মুক্তি পাবে আগামী বছর ১৯ মার্চ। আর একটি কথা, এই ছবির দীর্ঘ রানটাইম ছবির সাফল্যকে ধাক্কা দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। চেষ্টা করলে, অপ্রয়োজনীয় দৃশ্যগুলোকে ছেঁটে ফেলে ছবিটিকে একটি মানানসই আকার দেওয়া যেত। তা হয়নি। অন্যদিকে শাশ্বত সচদেব হিন্দি ক্লাসিকের উপর ভরসা রেখে ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোরকে অন্যমাত্রায় উপস্থাপন করতে পেরেছেন। পেক্ষাগৃহে যেগুলি শুনতে অনবদ্য লেগেছে। প্রকৃতপক্ষে, আদিত্য ধর ‘উরি দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ ছবির স্পাই থ্রিলার আবেগকে আর একপ্রস্ত এগিয়ে নিয়ে গেছে। মোটকথা, হলফেরত ধুরন্ধর ছবির রিভিউ অনুযায়ী  টিকিট কেটে এই ছবি দেখার মত, যদি দৈর্ঘ্যর বিষয়টা অনায়াসে অবজ্ঞা করা যায়।

 

ছবি– ইনস্টাগ্রাম

আরও পড়ুন – ধুরন্ধর ছবির কাল্পনিক চরিত্র বনাম ‘বাস্তব’ চরিত্র, কার সঙ্গে মিল ঠিক কতটা? কি রায় দিলেন সিনেমাবোদ্ধারা?

আরও পড়ুন – কোন গল্প বলবে সৃজিতের ‘এম্পেরর ভার্সেস শরৎচন্দ্র’? মুখ্য চরিত্রে থাকছেন কারা?

ফলো করুণ-