Wednesday, November 26

বিনোদন

‘ইয়ে দোস্তি হম নেহি তোড়েঙ্গে’, স্মৃতির আলেখ্যে ‘মহীরুহ’ ধর্মেন্দ্রর প্রতি অমিতাভের বেদনা বার্তা

‘তাঁর হাসি, তাঁর আকর্ষণ, তাঁর আত্মিক উষ্ণতা- যে-ই তাঁর সান্নিধ্যে এসেছে, সকলের মধ্যেই তা ছড়িয়ে পড়েছে। এই পেশায় এমন মানুষ সত্যিই বিরল। আজ আমাদের চারপাশের বাতাসে কেবল শূন্যতা…এ এমন এক শূন্যতা, যা সম্ভবত কখনও পূরণ হওয়ার নয়।’
'ইয়ে দোস্তি হম নেহি তোড়েঙ্গে', স্মৃতির আলেখ্যে 'মহীরুহ' ধর্মেন্দ্রর প্রতি অমিতাভের বেদনা বার্তা
'ইয়ে দোস্তি হম নেহি তোড়েঙ্গে', এক ইন্দ্রপতন, আর এক মহীরুহের বেদনা বার্তা। ধর্মেন্দ্র ও অমিতাভ। গ্রাফিক- সিবুলেটিন ডট কম।

‘ইয়ে দোস্তি হম নেহি তোড়েঙ্গে’, ‘বীরু’র প্রয়াণে ‘নিঃসঙ্গ’ অমিতাভ

৯৭৫ সালে মুক্তি পেয়েছিল বলিউডের কালজয়ী সিনেমা ‘শোলে’। সেই ছবিতে দুই বন্ধু ‘জয়’ এবং ‘বীরু’র চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন অমিতাভ বচ্চন এবং ধর্মেন্দ্র। রামগড়ের বুক চিরে ঘোড়ার ক্ষুরের শব্দ আর গব্বরের হুঙ্কারের মধ্যে এই দুই বন্ধুর বীরত্বের কাহিনী অমর হয়ে আছে। ছবিতে তাঁদের লিপে গাওয়া গান ‘ইয়ে দোস্তি হম নেহি তোড়েঙ্গে’ আজও দর্শকদের রোমাঞ্চিত করে। ছবিতে গব্বরের সঙ্গে লড়াই করতে গিয়ে ‘বীরু’র জন্য প্রাণ দিয়েছিল ‘জয়’। কিন্তু বাস্তবে হল তার উলটপুরাণ। মিলল না সেই হিসেব। এখানে জয়কে ‘একা’ রেখে বীরু পাড়ি দিলেন না-ফেরার দেশে। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সোমবার চিরবিদায় নিয়েছেন বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা ধর্মেন্দ্র। বন্ধুর প্রয়াণে তাই শোকস্তব্ধ বলিউডের আর এক মহীরুহ অমিতাভ বচ্চন। সমাজমাধ্যমে স্মৃতির পথ ধরে ধর্মেন্দ্রর প্রতি লিখলেন গভীর আলেখ্য।

‘ইয়ে দোস্তি হম নেহি তোড়েঙ্গে’

বন্ধুর প্রয়াণে গভীরভাবে ভেঙে পড়েছেন অমিতাভ বচ্চন। ধর্মেন্দ্রর শেষযাত্রায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি। শ্মশানে গিয়ে তাঁকে শ্রদ্ধাও জানিয়েছেন। কিন্তু এতদসত্ত্বেও নীরব ছিলেন তিনি। ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর পর একে একে সবাই যখন সমাজমমাধ্যমে এই বলিউড মহীরুহের প্রতি শোকজ্ঞাপন করছেন, তখন তিনি একপ্রকার নীরবই ছিলেন। কোনও প্রতিক্রিয়া তিনি জানাননি। অবশেষে মঙ্গলবার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে ভেঙে দিলেন সেই নীরবতা। ভারাক্রান্ত হৃদয়ে লিখলেন বন্ধুর প্রতি দীর্ঘ শ্রদ্ধাবাক্য।

‘ইয়ে দোস্তি হম নেহি তোড়েঙ্গে’, কলম ধরলেন অমিতাভ

সমাজমাধ্যমে শেয়ার করা বার্তায় বন্ধুর প্রতি অমিতাভজি লেখেন, ‘আরেকজন মহীরুহ আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন… সেইসঙ্গে রেখে গেলেন এমন এক নিস্তব্ধতা, যার প্রতিধ্বনি অসহনীয়।’ তিনি লিখছেন, ‘ধর্মজি মহত্বের প্রতীক। তিনি কেবলমাত্র তাঁর উপস্থিতির জন্য পরিচিত ছিলেন না, তাঁর হৃদয়ের ব্যাপ্তি ও মনোমুগ্ধকর সরলতার জন্যও তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন। পাঞ্জাবের যে গ্রাম থেকে তিনি উঠে এসেছিলেন, সেই মাটির গন্ধ তিনি সঙ্গে বয়ে এনেছিলেন। দীর্ঘ বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে, যেখানে এই ইন্ডাস্ট্রিতে দশকের পর দশক পরিবর্তন এসেছে, তিনি কিন্তু কখনো বদলাননি, রয়ে গিয়েছেন নিজের শিকড়ের কাছেই। তাঁর হাসি, তাঁর আকর্ষণ, তাঁর আত্মিক উষ্ণতা- যে-ই তাঁর সান্নিধ্যে এসেছে, সকলের মধ্যেই তা ছড়িয়ে পড়েছে। এই পেশায় এমন মানুষ সত্যিই বিরল।’ সবশেষে অমিতাভজি লিখছেন, ‘আজ আমাদের চারপাশের বাতাসে কেবল শূন্যতা…এ এমন এক শূন্যতা, যা সম্ভবত কখনও পূরণ হওয়ার নয়।’

‘ইয়ে দোস্তি হম নেহি তোড়েঙ্গে’

বস্তুত, অমিতাভ-ধর্মেন্দ্রের বন্ধুত্ব শুধু ‘শোলে’ ছবিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। প্রথমবার তাঁরা একসঙ্গে কাজ করেছিলেন ১৯৭৪ সালের ‘দোস্ত’ ছবিতে। এরপর ‘চুপকে চুপকে’, ‘শোলে’, ‘নসিব’, ‘রাম বলরাম’, ‘হাম কৌন হ্যায়’ সহ একাধিক ছবিতে তাঁদের এই জুটি দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছিল। নায়ক-নায়িকার জুটির জনপ্রিয়তাকেও ছাপিয়ে গিয়েছিল অমিতাভ-ধর্মেন্দ্র জুটির গ্রহণযোগ্যতা। সাম্প্রতিক সময়েও ব্যক্তিগত সম্পর্কের বন্ধন অটুট ছিল তাঁদের মধ্যে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ধর্মেন্দ্র তাঁর জীবনের শেষ অভিনয় করেছেন ‘ইক্কিস’ ছবিতে। এই ছবিতে জয়দীপ আহলাওয়াত সহ রয়েছেন অমিতাভের নাতি অগস্ত্য নন্দা। ২০২৫-এর বড়দিনে মুক্তি পাবে ছবিটি।

 

ছবি– এক্স, ইনস্টাগ্রাম।

আরও পড়ুন – ধর্মেন্দ্র: এক অবিসংবাদিত কিংবদন্তির জীবনাবসান

ফলো করুণ-