দীর্ঘ ২২ বছরের ব্যবধানে দুটি দিন। ১লা ফেব্রুয়ারি, ২০০৩ আর ১৯শে মার্চ, ২০২৫। নিশ্চিত যে ঘটনাবহুল এই দুটি দিন পৃথিবীর ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
প্রথম তারিখটি হল ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন মহাকাশচারী কল্পনা চাওলার মৃত্যুদিন। ২২ বছর আগে ২০০৩ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি ১৫ দিনের মহাকাশ সফর সেরে পৃথিবীর বুকে পা রাখার ঠিক ১৬ মিনিট আগে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করার মুহূর্তে প্রচণ্ড বিস্ফোরণে ফেটে যায় তাঁদের স্পেসশিপ। ‘কলম্বিয়া’ স্পেসশিপের মধ্যেই মৃত্যু ঘটে কল্পনা সহ আরো সাত জন নভোচরীর। বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সময় বিপুল চাপ আর ঘর্ষণে উৎপন্ন প্রচন্ড তাপ না সহ্য করতে পেরে ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছিল ‘কলম্বিয়া।’
দ্বিতীয় দিনটি হল ১৯শে মার্চ ২০২৫। যাবতীয় বাধা বিপত্তি কাটিয়ে অবশেষে সুনিতা উইলিয়ামস এর ঘরে ফেরার দিন। ২৮৬ দিন মহাকাশে কাতিয়ে সুনিতারা যখন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করছিল, বাইশ বছর আগের সেই দুর্বিষহ স্মৃতি মনে করাচ্ছিল সবার। কিন্তু এবার আর আর কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।
সুদীর্ঘ ৯ মাসের অধিক সময় মহাকাশের অতল গর্ভে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে (আইএসএস) কাটানোর পর ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহাকাশচারী সুনিতা উইলিয়ামস পৃথিবীর বুকে পা রাখলেন। অবতরণের দৃশ্য ছিল দেখার মত।
ভারতীয় সময় ভোর ৩ টে ২৭ মিনিটে, SpaceX এর ড্র্যাগন ক্যাপসুল সুনিতা উইলিয়ামস ও তাঁর সঙ্গী বুচ উইলমোর কে সঙ্গে নিয়ে আটলান্টিক মহাসাগরের ফ্লোরিডা সংলগ্ন উপকূলে নিরাপদে অবতরণ করে। সঙ্গে ছিলেন নাসার নিক হেগ আর রাশিয়ার মহাকাশচারী আলেকজান্ডার গর্বনুভ।
আগের দিন ১৮ই মার্চ, মঙ্গলবার আইএসএস থেকে পৃথিবীর উদ্দেশ্যে রওনা শুরু করার পর প্রায় ১৭ ঘন্টার অন্তরীক্ষ যাত্রা করে সুনীতারা পৌঁছলেন পৃথিবীতে। আটলান্টিক মহাসাগরে নিরাপদে অবতরণের জন্য অনেকটা উচ্চতা থেকে প্যারাসুট দিয়ে ক্যাপসুলের গতি কমিয়ে আনা হয়েছিল।
গত বছর জুন মাসে সুনিতা উইলিয়ামস এবং বুচ আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের উদ্দেশ্যে পাড়ি দিয়েছিলেন। তাঁদের মিশন ছিল মাত্র ৮ দিনের। কিন্তু মহাকাশে সমস্যার কারনে তাঁরা আটকে পড়েন। পেছাতে থাকে তাঁদের ফিরে আসার দিন। ৯ মাস অপেক্ষার পরে তাঁদের নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনল ইলন মাস্কের SpaceX এর ক্যাপসুল।